অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: জীবন-জীবিকার স্বার্থে সুদূর কেরলে যেতে হয়েছিল মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) জলঙ্গির যুবককে। সেখানে কাজ করতে করতে আলাপ একজনের সঙ্গে। সেখান থেকে ফোন নম্বর পেয়ে মিসড কলে যোগাযোগ বাংলাদেশের (Bangladesh) কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের মহিষকুণ্ডির এক তরুণীর সঙ্গে আলাপ ও প্রেম। এরপর তার সঙ্গে দেখা করতে সীমান্ত পেরিয়ে যেতেই বিজিবি’র হাতে গ্রেপ্তার। প্রায় ৩ বছর বাংলাদেশের কারাবাসে (Jail) কাটিয়ে এবার দেশে ফিরল বছর একুশের আমফান শেখ। তাঁর অভিযোগ, প্রেমিকার পরিবারই বিজিবি’র হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল।
কেরলে (Kerala) কাজ করতে করতে মিসড কল (Missed Call)থেকে আলাপ। তারপর মুর্শিদাবাদের আমফান শেখের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় বাংলাদেশের যুবতীর সঙ্গে। যুবতীর কাকার সঙ্গে কাজ করত আমফান। তাঁর সূত্রেই আলাপ। ধীরে ধীরে প্রেমিকের আহ্বানেই ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর অবৈধভাবে সীমানা পেরিয়ে দেখা করতে গিয়েছিল ভারতীয় যুবক আমফান শেখ। তার কথায় “একদিন থাকার পর ১১ সেপ্টেম্বর ফিরে আসার সময় স্থানীয় কয়েকজন বাংলাদেশী আমাকে ধরে বিজিবি’র হাতে ধরিয়ে দেয়।”
[আরও পড়ুন: শালবনি হাসপাতালে সারপ্রাইজ ভিজিট মুখ্যমন্ত্রীর, নাম দিলেন সদ্যোজাত শিশুর]
জানা গিয়েছে ওই ঘটনায় তার তিন মাসের জেল হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় নি। যা নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝখানে পড়ে তিনটি বছর চলে যায় তার। এর মধ্যেই আমফানের বাবা পাসপোর্টে বাংলাদেশে কয়েকবার গিয়ে জানতে পারেন যেহেতু বিচারক বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় হাই-কমিশনারকে চিঠি করেছেন। তাই সেখান থেকে অনুমতি না পেলে আমফানকে ছাড়া যাবে না। শেষে ২৫ মে ভারত বাংলাদেশের হাই কমিশনার পর্যায়ের অনুমতিক্রমে বিজিবি বৃহস্পতিবার গেদে সীমান্তে বিএসএফের (BSF) হাতে তুলে দেন আমফানকে। সেখান থেকে আইনি কারবার শেষে শনিবার বাড়ি ফেরে আমফান।
[আরও পড়ুন: জঙ্গলমহলে ফের বিপুল কর্মসংস্থান, জিন্দলদের অব্যবহৃত জমিতে নয়া শিল্প, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
আমফানের বাবা ইসমাইল শেখের কাঠ মিস্ত্রির দোকান আছে। ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পাশের পর আমফান আর পড়াশোনা করেনি। বাবার দোকানেই কাজ করতো। সেখানে না হওয়ায় মাঝে মধ্যে কেরলে যেত। শেষবার যখন যায় তখন ওই বাংলাদেশি প্রেমিকার কাকা আকাশ শেখও কেরলে কাজ গিয়েছিল। সেখানেই আকাশ শেখের মোবাইল থেকে প্রেমিকার নম্বর সংগ্রহ করে কথা হয়। সেই কথা কিছুদিনের মধ্যে প্রেমে পরিণত হয়। তখন প্রেমিকা দেখার জন্য বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য চাপ দিলে ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্ব অবৈধভাবে সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে যায়। একদিন থাকার পর ফিরে আসার পথে ধরিয়ে দেয় চারজন বাংলাদেশি। কিন্তু লক্ষ্যণীয় বিষয় ওই ঘটনায় তিন বছর সেখানকার জেলে থাকলেও প্রেমিকার বাড়ির কেউ দেখা করেনি। সেখান থেকেই ধারণা, প্রেমিকার বাড়ির লোকেদের কারসাজিতেই তাকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।