অর্ণব আইচ: বিয়ের আর ৬ দিন বাকি। তার আগেই বাড়িতে পুলিশের হানা। পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরির আগেই লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ল অভিযুক্ত। যদিও অভিযুক্তর বিয়ের কার্ড দেখে অনুষ্ঠানের তিন দিন আগে, অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচারক তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বিয়ের আগে সে আদৌ জামিন পাবে কি না, অথবা জামিন যদি না পায়, তবে কীভাবে তার বিয়ে হবে, তা জানেন না পরিবারের লোকেরাও। আর বিয়ের আগেই হবু জামাই গ্রেপ্তার হওয়ার ফলে মেয়ের কী হবে, তা নিয়ে ভেবে আকুল ওই ‘আসামী’র হবু শ্বশুরবাড়ি।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতার দু’টি এলাকায় পুরনো দু’টি অস্ত্র আইনের মামলায় লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে একই দিনে গ্রেপ্তার হয়েছে মোট ৬ জন। মধ্য কলকাতার পোস্তা ও বউবাজার এলাকা থেকে আগেই উদ্ধার হয় আগ্নেয়াস্ত্র। অস্ত্র পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধরপাকড় হয়। ধৃতদের জেরা করেই তদন্তে অস্ত্র পাচারে অভিযুক্ত আরও কয়েকজনের নাম জানতে পারেন লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের গুণ্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা। সেই সূত্র ধরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে পোস্তায় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় বিজয় পাসোয়ান, মুকেশ পাসোয়ান, ফারুক আলম ও সৈয়দ আফ্রিদি নামে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়াও বউবাজারে অস্ত্র পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় সৈয়দ সাকিব আলি ও কামরান খুরশিদ নামে দুই যুবককে।
[আরও পড়ুন: ফুলকপি বিক্রি করতে গিয়ে হুগলিতে গ্রেপ্তার ২ বাংলাদেশি, অনুপ্রবেশের নেপথ্যে বড় চক্রান্ত?]
ধৃতদের মধ্যে রাজাবাজারের বাসিন্দা সৈয়দ সাকিব আলির বিয়ে ২৩ ডিসেম্বর। বাড়িতে খুশির হাওয়া। মাত্র ৬ দিন পরই বিয়ে। তাই বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন আত্মীয়রা। এর মধ্যেই শনিবার রাতে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম পরিবারের। হঠাৎই লালবাজারের গোয়েন্দারা ঘিরে ফেলেন সাকিব আলির বাড়ি। পরিবারের লোকেদের গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানান, অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাকে। বিয়ের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিও থামাতে পারেনি গোয়েন্দাদের। গ্রেপ্তার করা হয় সাকিবকে। রবিবার ৬ জনকেই ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সাকিবের আইনজীবী আদালতে আবেদনে জানান, ২৩ ডিসেম্বর সাকিবের বিয়ে। তাই তার জামিনের আবেদন করা হয়।
সাকিবের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি বিয়ের কার্ডও আদালতে জমা দেওয়া হয়। সরকারি আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ওই বিয়ের কার্ডটি আসল কি না, তা-ও যাচাইয়ের প্রয়োজন। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিয়ের তিনদিন আগে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। যদিও বিচারক বাকিদের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এবার বিয়ের ভবিষ্যৎ জানতে বুধবারের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন সাকিবের পরিবারের লোকেরা।