সুব্রত বিশ্বাস: বিহারে মদ নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও সম্প্রতি বিহারে বিষমদ পান করে মৃত্যুর ঘটনা শিরোনামে উঠে এসেছে। তবে বিহারে যাতে মদ মেলে তার জন্য বাংলা থেকে বিহারে মদ পাচারে তরুণ প্রজন্মকে ব্যবহার করছে বিহারের কিছু বেআইনি মদের কারবারি। এক রাতে চকচকে তিন হাজার টাকা হাতে পেয়ে অনেকেই এই মদপাচারে যুক্ত হয়ে পড়ছে।
সোমবার গভীর রাতে হাওড়া ছেড়ে যাওয়া গয়া এক্সপ্রেসে তিন কিশোরকে ধরে এই তথ্য পেয়েছে আরপিএফ। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে ৩৩০ বোতল হুইস্কি আটক করেছে আরপিএফ। যার দাম ৪৬ হাজার টাকা। ট্রেনটিতে আরপিএফের হাওড়ার অপরাধ দমন শাখার চার কর্মী যাত্রী সেজে টহল দেওয়ার কাজ করছিল। গভীর রাতে ট্রেনটি রামপুরহাটে পৌঁছলে তিন কিশোর ছ’টি ভারী ব্যাগ নিয়ে উঠলে আরপিএফ তা তল্লাশি করতে চায়। তিনজনেই পালানোর চেষ্টা করলে আরপিএফ তাদের ধরে ফেলে। ব্যাগ থেকে ৩৩০টি মদের বোতল পায়। ধৃত মিঠুন কুমার, ফুলসান কুমার, শিভম কুমার বিহারের মুঙ্গেরের কোতোয়ালীর বাসিন্দা। হাওড়া স্টেশনে কড়া তল্লাশির ভয়ে তারা মুরারই থেকে মদের বোতল কিনে রামপুরহাট দিয়ে তা ট্রেনের মাধ্যমে পাচারের চেষ্টা করছিল। তিনজনের কাছে এসি টু টিয়ারের কনফার্মড টিকিট ছিল।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে কাজ করার চেয়ে টাকা চাওয়ার লোক বেশি! তৃণমূলের মুখপত্রে বিস্ফোরক প্রবীর ঘোষাল]
আরপিএফ (RPF) জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, তারা মদের বোতলগুলি বাংলা থেকে বিহারে পাচার করছিল। মজুরি হিসাবে পাবে তিন হাজার টাকা। এই টাকার লোভে বহু কিশোর এই বেআইনি কাজে জড়িয়ে পড়েছে বলে তাদের দেওয়া তথ্যে জানাতে পারে আরপিএফ। মদ পাচারের জন্য এসি কামরা ব্যবহার করে থাকে এই মদ পাচারকারীরা। কারণ হিসাবে আরপিএফ জেনেছে, এসি টু টিয়ারে মূলত সাধারণ যাত্রীরা ওঠে না, তাই ঝামেলা কম। বিশেষ চেকিংও হয় না। সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে মদের পাচারকারীরা বলে আরপিএফের মত। গয়া এক্সপ্রেস ছাড়া জামালপুর সুপার ও বনাঞ্চল একপ্রেসে মদ পাচার হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
মদ ছাড়াও মালগাড়ি থেকে দেদার কয়লা চুরিও রেল প্রশাসনকে ভাবিয়ে তুলেছে। রামপুরহাটের আশেপাশে এই চুরিতে একেবারে সামনের সারিতে রয়েছে মহিলারা। মালগাড়ি থেকে তারাই কয়লা নামায়। তারপর লাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে গিয়ে গাড়িতে তুলে দেয়। এতে আরপিএফের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের কথায়, বোলপুরের পর কোনও মহিলা আরপিএফ না থাকায় সমস্যা রয়েছে। মহিলা অপরাধীদের ধরার মতো ব্যবস্থা না থাকায় চুরি বেড়ে চলেছে। কয়লা চুরি নিয়ে যখন রাজ্যে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা তল্লাশি চালাচ্ছে তখন এই কয়লা চুরি নিয়ে আরপিএফ চুপ থাকায় প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।