অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: এক টানা গড়গড় করে বলতে পারে ৫০-৬০টা কবিতা। যেকোনও দেশের রাজধানীও একেবারে ঠোঁটস্থ। রয়েছে খেলার ছলে নিমেষে কঠিন অঙ্ক কষে ফেলার দক্ষতা। এমন প্রতিভাবান শিশুকে শুধু শিশু না বলে ‘সুপার চাইল্ড’ বলা যেতেই পারে। গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া-১ নম্বর ব্লকের কালীনগর গ্রামের এই সুপার চাইল্ডের নাম সৌজন্য মাজি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে সে পরিচিত ‘তোতাপাখি’ নামে।
বিশেষ এই প্রতিভার জন্য দশ বছরের সৌজন্যর ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের অসংখ্য পুরস্কার। যার মধ্যে রয়েছে নাসা ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড, ডিসকভারি সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন, এশিয়া বুক অফ রেকর্ডস, ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস। এমনকী কেন্দ্রীয় সরকার প্রদত্ত প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কারের জন্যও সৌজন্যের নাম মনোনীত হয়েছে। সারা দেশের ২৬ লক্ষ মনোনয়নের মধ্যে ৫০০ জনের তালিকায় রয়েছে সৌজন্যের নাম। যদিও সেই তালিকা এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা হয়নি। তবে এই অভাবনীয় দক্ষতার জন্য সৌজন্য স্থান করে নিয়েছে কালাম ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে।
[আরও পড়ুন: হুগলি থেকে সুদূর আফ্রিকা, বাংলার কারখানায় তৈরি টোটোর বিদেশযাত্রা]
জানা গিয়েছে, সৌজন্যের বাবা সুমন মাজি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। ছেলেবেলা থেকে সুমনবাবুর লেখাপড়ার প্রতি ভীষণ মনোযোগ। তবে সৌজন্য শিশু বয়সেই ছাপিয়ে গিয়েছে তার বাবাকে। ছেলের এই প্রতিভা সম্পর্কে সুমনবাবু জানান, “সৌজন্যের যখন সাড়ে তিন বছর বয়স, সেসময় থেকেই ওর এমন গুণের কথা আমরা বুঝতে পারি। ওর মধ্যে রয়েছে আশ্চর্যজনক ক্ষমতা। সাধারণ জ্ঞান থেকে অঙ্ক, ইংরাজি সমস্ত বিষয়ে যেমন আগ্রহী। তেমনই দ্রুততার সঙ্গে যেকোনও বিষয়কে নিজের আয়ত্ত করে নিতে পারে। পড়ার প্রতি ভীষণ মনোযোগ। সারা বছরের পাঠ্যবই দু-এক মাসের মধ্যেই শেষ করে ফেলে। সেই সঙ্গে খেলাধুলার প্রতিও মনোযোগী।”
বর্তমানে সৌজন্য হাওড়ার একটি বেসরকারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া। বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, ঠাকুমা-দাদু। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলাতেও তার গভীর মনোযোগ। তার ভালো লাগার খেলার মধ্যে রয়েছে ক্রিকেট ও ফুটবল। ক্রিকেট প্র্যাক্টিসের পাশাপাশি ক্যারাটেতেও ইতিমধ্যেই সাফল্য পেয়েছে সৌজন্য। বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে এই খুদের। একজন কার্ডিয়লজিস্ট হবে সে। ছোটবেলা থেকে সৌজন্য দেখছে দাদুর হার্টের সমস্যা। সে কারণেই ডাক্তার হয়ে মানুষকে বাঁচাবে, সুস্থ করে তোলার ইচ্ছা তার। সেই স্বপ্ন নিয়েই এগিয়ে চলেছে উলুবেড়িয়ার ‘সুপার চাইল্ড’ সৌজন্য মাজি।