সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ ঘোষণার সময় রাশিয়ার দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো ভেবেছিলেন নিমেষে গুঁড়িয়ে দেবেন ইউক্রেনীয় প্রতিরোধ। কয়েক দিন, বড়জোর কয়েক সপ্তাহ লাগবে ইউক্রেন সেনাকে পরাভূত করতে। কিন্তু বাস্তব ছবি বলছে অন্য কথা। আজ ১০০ দিন ধরে চলেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। কিন্তু এখনও ছোট্ট প্রতিবেশী দেশটির সিংভাগই দখল করতে পারেনি রুশ (Russia) বাহিনী। অন্তত উইক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির তেমনটাই দাবি।
১০০ দিনে ইউক্রেনের অন্তত ২০ শতাংশ এলাকা দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy)। সেই সঙ্গে ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের দাবি, রুশ সেনার কিয়েভ দখলের স্বপ্ন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে তাঁর বাহিনী। জেলেনস্কির দাবি, কিয়েভ তো বটেই ইউক্রেনের অধিকাংশ এলাকায় তাঁদের দখলে আছে। ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, মারিউপোল এবং খারকভের বেশ কিছু অঞ্চলে কব্জা করলেও এই এলাকাগুলি পুরোপুরি দখল করতে পারেনি রুশ সেনা। মূলত দোনবাস অঞ্চলে ইউক্রেনীয় সেনার উপর প্রবল চাপ তৈরি করেছে রাশিয়া।
[আরও পড়ুন: প্রতিদিন প্রাণ দিচ্ছেন ১০০ ইউক্রেনীয় সেনা, যুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরলেন জেলেনস্কি]
লুহানস্কে জেলেনস্কি বাহিনীর শেষ ঘাঁটি সেভেরদোনেৎস্ক শহর নিয়ে জোর লড়াই চলছে দুই ফৌজের মধ্যে। দোনবাস অঞ্চলের অর্ধেক এলাকাই লুহানস্কের অন্তর্গত এবং রাশিয়া এখন এই জায়গাটিকেই তাদের যুদ্ধপ্রয়াসের প্রথান কেন্দ্রে পরিণত করেছে। যদি দোনবাস রাশিয়ার (Russia) পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে যায় তাহলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু সেটাও তিনি এখনও করতে পারেননি। তবে পুতিন বাহিনী এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আগের থেকে ইউক্রেনের মূল ভূখণ্ডে আক্রমণের তীব্রতা কম হলেও গোলাগুলি বা ক্ষেপণাস্ত্র হানা থামায়নি রুশ সেনা।
[আরও পড়ুন: অবস্থান বদলে ইউক্রেনকে রকেট সিস্টেম দিচ্ছে আমেরিকা, ‘ফল ভুগতে হবে’, তোপ রাশিয়ার]
কিন্তু কোন জাদুবলে প্রবল পরাক্রমী রুশ সেনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে ইউক্রেন? ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন খোদ গান্ধীজির (Mahatma Gandhi) কাছ থেকে। গান্ধীজির বাণী ধার করে নিয়ে দিন দুই আগের এক অনুষ্ঠানে জেলেনস্কি বলছিলেন, “শারীরিক ক্ষমতা নয়, ভয় বা ভীতির অনুপস্থিতিই সবচেয়ে বড় শক্তি। প্রথমে ওঁরা তোমাকে উপেক্ষা করবে, তারপর তোমাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে, তারপর তোমার বিরুদ্ধে লড়াই করবে। আর তারপর জয় তোমার হবে।” আর এই বাণীই উদ্বুদ্ধ করছে ইউক্রেন সেনাকে, ইউক্রেনের (Ukraine) আমনাগরিককে, তাঁরাই গড়ে তুলছে প্রতিরোধ।