দীপঙ্কর মণ্ডল: করোনা (Coronavirus) আবহে পরীক্ষাহীন মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক। স্কুলজীবনের এসব বড় পরীক্ষা হলে বসে দেওয়ার সুযোগ পায়নি দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা। বিকল্প পদ্ধতিতে এবার তাদের মূল্যায়ন হয়েছে। আর তাতেই বিপাকে পড়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের একাংশ। ২০২১ সালের মাধ্যমিকে ১০০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পাশ করলেও, উচ্চমাধ্যমিকে এই হার ছিল ৯৭.৬৯ শতাংশ। তাতেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা দিয়েছিল প্রবল বিক্ষোভ। পথ অবরোধ, স্কুলে ভাঙচুর, সংসদ কার্যালয় বিদ্যাসাগর ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ – কিছুই বাদ পড়েনি। সেসবের পর ‘মানবিক’ সিদ্ধান্ত নিল বোর্ড। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে উচ্চ মাধ্যমিকেও (Higher Secondary) ১০০ শতাংশ পাশের ঘোষণা করে দিলেন উচ্চশিক্ষা সংসদের (WBCHSE) সভাপতি মহুয়া দাস। জানালেন, স্কুলগুলির তরফে পাঠানো নম্বরে ভুলত্রুটি থাকার কারণে আগের ফলপ্রকাশে আংশিক ত্রুটি ছিল। এবার সেইসব সংশোধন করে নেওয়া হল। বোর্ডের এই ঘোষণায় খুশি পড়ুয়ারা।
মাত্র ২.৩১ শতাংশ। এবারের উচ্চ মাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণের সংখ্যা বলতে ১৮ হাজারের কাছাকাছি। ২২ জুলাই ফলপ্রকাশের সময় আবার সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ছাত্রীর ধর্ম উল্লেখ করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তা নিয়েও বেশ চাপানউতোর চলে। তবে তারও বাইরে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চাপ বাড়িয়ে তুলছিল। তারা মনে করেছিল, এই ফলাফল তাদের প্রত্যাশিত নয়। পাশমার্কস পাওয়াই স্বাভাবিক। এর জন্য মূল্যায়ন পদ্ধতির ত্রুটিকেই চিহ্নিত করতে চেয়ে প্রতিবাদে নামেন অকৃতকার্য পড়ুয়ারা। বিভিন্ন স্কুলে ভাঙচুর, পথ অবরোধের মধ্যে দিয়ে ‘পাস’ মার্কশিটের দাবি তোলে তারা। কেন উচ্চ মাধ্যমিকে ২.৩১ শতাংশ অকৃতকার্য হয়েছে, তার ব্যাখ্যা চেয়ে সংসদের সভাপতির কাছে জবাব তলব করেছিল শিক্ষাদপ্তর।
[আরও পড়ুন: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্যসভার সাংসদ হলেন তৃণমূল মনোনীত Jawhar Sircar]
এরপর শিক্ষা সচিব মনীশ জৈন উচ্চ মাধ্যমিক ফল বিভ্রাট ইস্যুতে জেলাশাসকদের মাঠে নামার নির্দেশ দেন। সংসদ ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে অসন্তুষ্ট ছাত্রছাত্রীদের আবেদন নিয়ে স্কুলগুলিকে আসতে নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি একটি ছাপানো মুচলেকা ডিআইদের মাধ্যমে স্কুল কর্তৃপক্ষের থেকে সই করিয়ে নেয় সংসদ। মুচলেকায় প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা বা টিচার ইনচার্জদের জানাতে হয়, “আমাদের ত্রুটির কারণেই কিছু ছাত্রছাত্রীর ভুল নম্বর এসেছে। তার জন্য আমরা ক্ষমা চাইছি। দয়া করে নতুন মার্কশিট দেওয়া হোক।” এরপর আবেদনকারীদের সবাইকে সংশোধিত মার্কশিট পাঠানো হয়। তাতে দেখা যায়, সকলেই পাশ করেছে।