সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অশান্ত বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লেও অশান্তি থামেনি ওপার বাংলায়। এরই মধ্যে ঢাকা-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অন্তত শতাধিক মানুষের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যার মধ্যে আছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও। মাঝরাত পর্যন্ত টানা অশান্তিতে মৃতের সংখ্যা আরও বেড়েছে।
জানা যাচ্ছে, সোমবার সারাদিনের বিশৃঙ্খলার জেরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজেই ৩৭টি মৃতদেহ আসে। যাত্রাবাড়ি, চানখানপুর সহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মৃতদেহ এসে পৌঁছয় ঢাকা মেডিক্যালে। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা তিন ব্যক্তির দেহও এসেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অন্তত ৫০০ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা ১৩৫ বলে খবর।
[আরও পড়ুন: সেনাশাসন নয়, ‘দেশ গড়তে’ ইউনুসকেই চাইছে বাংলাদেশের আন্দোলনকারীরা]
এর মধ্যে ঢাকার উত্তরায় থানা ঘেরাওকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাতে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। সাভারেও উভয়পক্ষের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ১৮। শুধু ঢাকা নয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই পাওয়া যাচ্ছে হানাহানির খবর। হাসিনার দেশত্যাগের পর যশোরের আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদকের পাঁচ তারা হোটেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তাতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: দেশ ছাড়তে মাত্র ৪৫ মিনিট সময়, হাসিনাকে ‘শেষ বার্তা’ও দিতে দেয়নি সেনা!]
কুষ্টিয়া, হবিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজিপুর থেকেও অসংখ্য মানুষের নিহত হওয়ার খবর আসছে। এর মধ্যে খুলনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামি লিগের সভাপতি মোহসিন রেজার বাড়িতে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। সেখানেই তাঁদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়। চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান সেলিম খান ও তাঁর ছেলে অভিনেতা শান্ত খানকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। জানা যায়, এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনরোষের মুখে পড়েন তাঁরা। সেখানে গুলি চালিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও পার্শ্ববর্তী বাগাড়া বাজারে এসে মারমুখী ভিড়ের মুখোমুখি হন তাঁরা। সেখানেই পিটিয়ে খুন করা হয় সেলিম খান ও তাঁর ছেলে শান্ত খানকে।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা-সহ সোমবার বেলা আড়াইটেয় বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন। এর আগে দুপুরে সেনা সদরদপ্তরে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, জামাত নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল-সহ অনেকে বৈঠকে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।