মাসুদ আহমেদ, শ্রীনগর: চলতি বছর এপর্যন্ত নিহত হয়েছে ১১৪ জন সন্ত্রাসবাদী। যার মধ্যে রয়েছে ৩২ বিদেশি জঙ্গি। সোমবার এমনটাই জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের আইজিপি বিজয় কুমার। ভূস্বর্গে গত দশদিনে নিরাপত্তারক্ষীদের হতে নিহত হয়েছে ২৪ জন জেহাদি বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি উপত্যকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিশানা করছে সন্ত্রাসবাদীরা। একের পর এক অমুসলিমদের হত্যা করা হয়েছে। ২ জুন কুলগামের এক ব্যাংকে ঢুকে গুলি চালায় জঙ্গিরা। সেই হামলায় প্রাণ হারান বিজয় কুমার নামের ব্যাংক ম্যানেজার। তার আগে মে মাসে কুলগাম এলাকার গোপালপুরা হাই স্কুলে হামলা চালিয়ে রজনী বালা নামের এক কাশ্মীরি পণ্ডিত শিক্ষিকাকে খুন করে জঙ্গিরা। ফলে কাশ্মীরে আতঙ্কে ভুগছেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। অনেকেই উপত্যকা ছেড়ে চলে এসেছেন। এহেন পরিস্থিতিতে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কড়া অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী ও কাশ্মীর পুলিশ। এবং তাতে যথেষ্ট সাফল্য মিলেছে।
[আরও পড়ুন: পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কাশ্মীরে নিহত পাক জঙ্গি, আটক আরও তিন জেহাদি]
উল্লেখ্য, এপ্রিল মাস থেকেই পরপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে কাশ্মীরে। প্রথমে সরকারি অফিসে ঢুকে এক কাশ্মীরি পণ্ডিতকে খুন করেছিল জঙ্গিরা। সেই ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে কাশ্মীর (Kashmir)। পুলিশকর্মী থেকে জনপ্রিয় অভিনেত্রী, এক মাসে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। পর্যবেক্ষকদের অনুমান, এবার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের শিক্ষাব্যবস্থায় হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা। কাশ্মীরি পণ্ডিত শিশুরা যেন পড়াশোনা করতে না পারে, সেই কারণেই স্কুলে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত মে মাসেই কেন্দ্রশাসিত প্রদেশটির আসন পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এবং ওই মাসেরই ২০ তারিখে বিজ্ঞপ্তি জারি করে তা বলবৎ করে কেন্দ্র সরকার। তারপরই কাশ্মীরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। গত শুক্রবার জম্মুতে এক অনুষ্ঠানে রাজনাথ বলেন, “সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষের দিকে জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচন হলেও হতে পারে।”
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদ করা হয়। তারপরই সেখানে শান্তি ফিরেছে বলে দাবি করে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু সম্প্রতি কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর একের পর এক হামলায় চরম বিপাকে পড়েছে শাসকদল বিজেপি। এছাড়া, সীমান্তে পাকিস্তানের উসকানি এবং কাশ্মীরে অমুসলিমদের উপর জেহাদিদের হামলা, সবমিলিয়ে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে কেন্দ্রের মোদি সরকার।