সুকুমার সরকার, ঢাকা: শিয়রে বর্ষাকাল। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। এহেন পরিস্থিতিতে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গা (Rohingya) শরণার্থীরা। ফলে অনেকেই দ্বীপটি থেকে পালিয়ে মূল ভূখণ্ডে ফেরার চেষ্টা করছেন। এবার এমনই ১২ পলাতক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বসবাসের অযোগ্য বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা! তালিকায় বিশ্বের শেষ চারে এই শহর]
জানা গিয়েছে, মহিলা ও শিশু-সহ ১২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে কোম্পানীগঞ্জ পুলিশ। শুক্রবার ভোরে চর এলাহী দক্ষিণ ঘাটের স্থানীয় লোকজন তাঁদের আটক করে থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ তাঁদের থানায় নিয়ে যায়। গ্রেপ্তার হওয়া রোহিঙ্গাদের নাম হোসেন (৩৫), খতিজা খাতুন (৮৩), মমিনা বেগম (২৬), রাশেদা আক্তার (২৩), মো. ইউসুফ (৩৫), মো. সিদ্দিক (২০), জুবাইদা আক্তার (১৬), আবুল হায়েজ (১৩), মো. শহিদ (৬), মো. তারেক (৮), আরমান (১) ও ওমাহের (৪)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে গোপনে ভাসানচরের শরণার্থী শিবির থেকে থেকে পালিয়ে চোরাই পথে নৌকা ভাড়া করে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশে রওনা দেয় ধৃতরা। কিন্তু মাঝপথে নৌকার মাঝি ভোররাতের দিকে তাদের চর এলাহী দক্ষিণ ঘাটে নামিয়ে দিয়ে সরে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ভাসানচর থেকে পালিয়ে আসার কথা স্বীকার করে।
সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরেব বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘Human Rights Watch’ (HRW)। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে বর্ষাকালে কিছুতেই ভাসানচরে থাকতে চাইছেন না শরণার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ে দ্বীপটির পরিকাঠামো ভেঙে পড়তে পারে। প্রবল বন্যায় ভেসে যেতে পারে ঘরবাড়ি। এছাড়া, প্রয়োজনীয়ও চিকিৎসা ব্যবস্থাও নেই। সেক্ষত্রে এই জায়গায় বাস করা মানে বিপদ ডেকে আনা। প্রশাসন জানিয়েছে, দ্বীপটিতে শরণার্থীদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এপর্যন্ত প্রায় ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে সমুদ্রের মাঝে বিচ্ছিন্ন দ্বীপটিতে পাঠানো হয়েছে। মোট ১ লক্ষ শরণার্থীকে ভাসানচরে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে ঢাকার। তবে ঝঞ্ঝাপ্রবণ দ্বীপে শরণার্থীদের পাঠানো নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মঞ্চ।