নিজস্ব সংবাদদাতা, আগরতলা: ত্রিপুরায় (Tripura) চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিগত বাম সরকারের ভুলের জেরে ১০ হাজার ৩২৩ শিক্ষক ছাঁটাই হয়েছিলেন। ২০১৭ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এইসব ছাঁটাই হওয়া শিক্ষকদের চাকরিতে বহাল রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তারা কথা রাখেনি। ফলে ওই সমস্ত শিক্ষক আর্থিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন শুরু করেছেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকজন ছাঁটাই হওয়া শিক্ষক। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কয়েকজন অনশনকারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মূলত শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ধাঁচেই অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকারের আমলে। অনিয়মের অভিযোগে ত্রিপুরা হাই কোর্টে মামলাও হয়। মামলায় চাকরি যায় ১০ হাজার ৩২৩ শিক্ষকের। হাই কোর্টের চূড়ান্ত রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্টও। শিক্ষক আন্দোলনের নেতা প্রদীপ বণিক জানিয়েছেন, কোনও সরকারই কথা রাখেনি। বর্তমান বিজেপি সরকারও তাঁদের চাকরিতে বহাল করেনি। প্রদীপবাবু অবিলম্বে তাঁদের চাকরিতে বহালের দাবি জানিয়েছেন। ছাঁটাই হওয়া শিক্ষকরা বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গেও।
[আরও পড়ুন: ‘জিন্দেগি তো বেওয়াফা হ্যায়…’, শোকজের জবাব দিয়েই ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট বড়ঞার ওসির]
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার চাকরিচ্যুতদের প্রতি সহানুভূতিশীল। বর্তমান বিজেপি সরকার তাঁদের চাকরির মেয়াদ দু’বছর বাড়িয়েছিল। চাকরিতে বহাল রাখার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল। কিন্তু শীর্ষ আদালত রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। তবে চাকরিচ্যুতদের মধ্যে যাঁরা টেট উত্তীর্ণ, তাঁদের নিয়োগ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন নিয়োগপত্র পেয়েছেন। কিন্তু টেট উত্তীর্ণ না হলে এবং সর্বোচ্চ আদালতের সবুজ সংকেত না পেলে চাকরি ফেরানোয় সমস্যা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যে চাকরিচ্যুতদের মধ্যে ১৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। অনেককেই দিনমজুর খাটতে হচ্ছে। নিদারুণ অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে চলতে হচ্ছে তাঁদের। অনেককে ১০/১২ বছর চাকরি করার পর ছাঁটাই হতে হয়েছে। অনাহারে দিন যাপন করতে হচ্ছে। দেশের ইতিহাসে চাকরিচ্যুত হয়ে এত বিশাল সংখ্যক শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছে শিক্ষামহল।