রাজা দাস, বালুরঘাট: দুবাইকে কাজে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ। বাড়ি ফিরতে চাইলে আরও টাকার দাবি দালালের! অবশেষে ভিডিওর মাধ্যমে নিজেদের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার দুই শ্রমিক। ঘরের ছেলেকে ঘরে ফেরাতে সাংসদের দ্বারস্থ পরিবার।
জানা গিয়েছে, দুবাইয়ের কোম্পানিতে বড় পদে কাজ দেওয়ার নাম করে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বানগড়ের বিপ্লব সরকার ও দেবাশিসকে নিয়ে যায় মালদহের নালাগোলা ও পাকুয়ার দুই দালাল। চাকরি বাবদ দালালরা আড়াই লক্ষ টাকা নেয় বলে অভিযোগ। এভাবেই মালদহ, কৃষ্ণনগর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৫ জন যুবককে ৫ ডিসেম্বর দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে মোটা টাকা নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। দুবাই পৌঁছনোর পর বাড়িতে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান বিপ্লব ও দেবাশিস।
[আরও পড়ুন: জমির পাট্টা, মাসিক ভাতা, বাড়ির তৈরির টাকা, উত্তরবঙ্গে চা শ্রমিকদের জন্য কল্পতরু মমতা]
তাঁরা জানান, কোম্পানিতে বড় পদে কাজ দেওয়ার নাম করে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় দুবাইয়ে। কিন্ত সেখানে কোনও কোম্পানি নয়, শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে। তাও আবার অমানবিক খাটুনি। প্রতিদিন ভোর চারটের সময় কাজে যেতে হয়। ফেরানো হয় রাত আটটায়। বাকি সময়ে রান্না ও ঘুম। নেই ওষুধ পত্রের ব্যবস্থা। দিন মাত্র ২০০ টাকা করে দেওয়া হয়। তাও সাড়ে তিনমাস পর মিলবে মাত্র এক মাসের টাকা! অভিযোগ, কাজে অনিহা প্রকাশ করতেই ওই যুবকদের ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছে। বাড়ি ফিরতে চাইলে আরও ১ লক্ষ টাকা ওই ঠিকদার দাবি করে বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে বিপ্লবের মা নিশারানি সরকার এবং দেবাশিসের মা লক্ষ্মী সরকার বলেন, “ছেলেরা কোনওমতে আমাদের ভিডিওটি পাঠিয়েছে। এর পরই সব জানতে পারি। যাওয়ার সময় কিছু জমিজমা বিক্রি করে টাকা জোগাড় করা হয়েছিল। খাওয়া দাওয়া নেই, খুব অত্যাচার চলছে বলে শুনেছি। ছেলেদের ফিরিয়ে আনতে আমরা স্থানীয় সাংসদের কাছে আর্জি জানিয়েছি। আর যেখানে যেখানে যেতে হয় যাব।” বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার জানান, এ নিয়ে তিনি বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁর আশা, বিদেশমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আটকে থাকা যুবকদের উদ্ধার করা যাবে।