সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কথায় বলে, মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের বাস। কোনও মানুষের কাজেই তাঁর পরিচয়। এদেশের এক প্রান্ত থেকে যখন কন্যা ভ্রূণ হত্যার মতো ঘটনা শিরোনামে উঠে আসে, তখন আরেক প্রান্তে মেয়ের মধ্যেই ঈশ্বরকে খুঁজে পেলেন বাবা। রাখি দত্ত। সাতপাঁচ না ভেবেই যিনি বাবাকে সুস্থ করতে লিভারের অনেকটা অংশ দান করলেন।
[আরও পড়ুন: মুসলিমদের ধ্বংস করতে চাইলে মোদিকে ভোট দিন, বিতর্কিত মন্তব্য বিজেপি নেতার]
বয়সকালে সন্তানই হয়ে ওঠে বাবা-মায়ের লাঠি। তাদের উপরই ভরসা করেন অভিভাবকরা। তবে মেয়ে নয়, এ সমাজে বাবা-মা বেশি নির্ভরশীল পুত্র সন্তানের উপর। এ সমাজে আজও মেয়ে মানে মাথাব্যথা। মেয়ে মানে তেমন কাজের নয়। মেয়ে মানে বোঝা। তথাকথিত এই ভাবনায় সজোরে আঘাত করলেন তিনি। কন্যা ভ্রূণ হত্যাকারীদের গালে সপাটে চড় মেরে ১৯ বছরের রাখি বুঝিয়ে দিলেন, সুযোগ্য সন্তান হতে ছেলে বা মেয়ের তকমা লাগে না। লাগে একটা বড় মন। যে মন অভিভাবকের জন্য নিজের সবটুকু উজার করে দেওয়ার সৎ সাহস রাখে। মা-হারা রাখি বাবার জন্য যা করে দেখালেন, তাতে তিনি নিঃসন্দেহে গোটা দেশের কাছে একটা বড় দৃষ্টান্ত হয়ে রইলেন।
দীর্ঘদিন ধরেই লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন রাখির বাবা। চিকিৎসকরা লিভার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। প্রথমে কলকাতায় চিকিৎসা চালানোর চেষ্টা করেন রাখি ও তাঁর বোন। কিন্তু সেভাবে সাড়া না মেলায় তাঁরা বাবাকে নিয়ে যান হায়দরাবাদ। এআইজি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। আর সেখানেই জীবনের সবচেয়ে কঠিন ও সাহসী সিদ্ধান্তটা নেন রাখি। ভবিষ্যতে তাঁর কী হবে? খুব যন্ত্রণা হবে না তো? শরীরের দাগ দেখতে খারাপ লাগবে না? কেউ তাঁকে কি আর পছন্দ করবে? এমন কোনও প্রশ্নকেই মনে প্রশ্রয় দেননি রাখি। বরং তাঁর কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাবার সুস্থ হয়ে ওঠা। তাই ঠিক করে ফেলেন, লিভারের ৬৫ শতাংশ বাবাকে দান করবেন। মেয়ের নেওয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বাবার সফল লিভার প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। রাখির এমন পদক্ষেপে গর্বিত বাবা। অসম্ভবকে সম্ভব করা রাখিকে কুর্নিশ জানাচ্ছে নেটদুনিয়াও।
[আরও পড়ুন: বায়োপিক নিয়ে খোঁচা, উর্মিলাকে আক্রমণ সেলুলয়েডের মোদির]
The post লিভারের ৬৫ শতাংশ বাবাকে দান, তরুণীর সাহসকে কুর্নিশ নেটদুনিয়ার appeared first on Sangbad Pratidin.