সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কয়লা মাফিয়া রাজেশ ওরফে রাজু ঝা (Raju Jha) হত্যাকাণ্ডে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দিল্লি থেকে চুরি করা নীল ব্যালেনো গাড়িটি এনেছিল এই দু’জন। বিনিময়ে মোটা টাকা পেয়েছিল তারা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হল ইন্দ্রজিৎ গিরি ও লালবাবু কুমার। তাদের ঝাড়খণ্ডের রাঁচির জগন্নাথপুরের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে তাদের ধরেছে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গঠিত স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট)। সোমবার তাদের বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ। বিচারক ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন জানিয়েছেন, সূত্র মারফৎ এই দু’জনের কথা জানা গিয়েছিল। তার ভিত্তিতেই রাঁচি থেকে এই দু’জনকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চালাচ্ছে সিট। গত ১ এপ্রিল শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে গুলি করে খুন করা হয়েছিল রাজুকে। ঘটনার ১৮ দিনের মাথায় সিট দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল অভিজিৎ মণ্ডল নামে অন্যতম এক ষড়যন্ত্রীকে। তাকে ১৪ দিনের হেফাজতে নেয় পুলিশ। রবিবার আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে রাঁচি থেকে। এই নিয়ে মোট তিনজন গ্রেপ্তার হল রাজু হত্যাকাণ্ডে।
[আরও পড়ুন: সবুজ পাতায় শরীর ঢাকলেন ঋতাভরী, ছবি দেখে কী বলছেন নেটিজেনরা?]
জানা গিয়েছে, ধৃত ইন্দ্রজিতের বাড়ি উত্তর প্রদেশের বারাণসীর জগদীশপুরে। লালবাবুর বাড়ি বিহারের গয়া জেলার কাল্লিপুর থানার আকবরপুরে। তারা রাজু খুনের মাসখানেক আগে থেকে রাঁচির পুনদুর্গ আউটপোস্টের জগন্নাথপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছিল। যে তাদের বাড়ি ভাড়া দেখে দিয়েছিল, বাড়ি ভাড়ার টাকা মেটাচ্ছিল ধৃতদের জেরা করে তার সন্ধান পেতে চাইছে সিট। বুধবার ফের ধৃত অভিজিৎ মণ্ডলকে পেশ করা হবে বর্ধমান আদালতে। তার আগে অভিজিতের সঙ্গে এই দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চাইছে সিট। তাতে রহস্যের জট অনেকটাই খুলবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
রাজু খুনের আততায়ীরা নীল ব্যালেনো গাড়িতে চড়ে এসেছিল। রাজুকে খুন করে তারা সেই গাড়িতে চড়েই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় তারা। তবে সেই গাড়িটি তারা শক্তিগড় থানার অদূরে ফেলে রেখে যায়। অন্য একটি সাদা গাড়িতে করে তারা পালিয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এছাড়া আরও দুইটি গাড়ি শার্প শুটারদের পালানোর জন্য মজুত রাখা হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে সিট। ধৃতদের জেরা করে সেই গাড়ির মালিকদের হদিশ পেতে চাইছে সিট। সেটা পেলেই শার্প শুটারদের কাছে তদন্তকারীরা পৌঁছতে পারবেন বলে আশা করছেন।
[আরও পড়ুন: বোনের বিয়ের নিমন্ত্রণ করতে গিয়েছিলেন, কী করেছিলেন সত্যজিৎ রায়? জানালেন প্রসেনজিৎ]
নীল ব্যালেনো গাড়ি দিল্লি থেকে আনার পাশাপাশি সেই গাড়ি চুরিতে ইন্দ্রজিৎ ও লালবাবুর হাত থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। রাজু ঝা হত্যাকাণ্ডের পর ঝাড়খণ্ডের ‘গ্যাংস ওয়াসেপুর’-এর শুটারদের হাত থাকতে পারে বলে অনুমান করছিলেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রেই ধানবাদ, হাজারিবাগ-সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় সিট। সেখান থেকেই সূত্র মেলে। গ্রেপ্তার করা হয় অভিজিৎকে। তাকে হেফাজতে নেওয়ার পর আরও দু’জনের সন্ধান পেল সিট। এবার কয়লা কারবারি রাজু ঝা হত্যায় শার্প শুটারদের জালে তুলতে চাইছে সিট।