অর্ণব আইচ ও দেবব্রত মণ্ডল: ভুয়ো সিমকার্ড কিনে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ। অ্যাকাউন্ট ভাড়া করে তাতে টাকা জমা রাখার অভিযোগ! কটক থেকে কলকাতা পুলিশের জালে ২। ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মহম্মদ সালাউদ্দিন ও সামশাদ আলি। কটকে রীতিমতো অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেওয়ার কারবার ফেঁদে বসেছিল সালাউদ্দিন। তাকে জেরা করে পুলিশ এই ধরনের বেশ কিছু অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে। সালাউদ্দিনের সঙ্গে জামতাড়া ও কলকাতার একাধিক জালিয়াত চক্রের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। জালিয়াতির টাকা সালাউদ্দিনের মাধ্যমেই পৌঁছে যেত বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে। ধৃতরা দু’জনই ওড়িশার কটকের বাসিন্দা।
[আরও পড়ুন: লাগাতার ব্ল্যাকমেলের জের! মানসিক অবসাদে প্রেমিকার সামনেই ছাদ থেকে মরণঝাঁপ যুবকের]
সম্প্রতি পর্ণশ্রী থানার হাতে ধরা পড়ে জাল সিমকার্ড চক্র। ওটিপি কিনে ই-ওয়ালেটের অ্যাকাউন্টও খুলত জালিয়াতরা। সেই অ্যাকাউন্ট বিক্রি করা হত জামতাড়া ও অন্যান্য জালিয়াতদের। ওই চক্রের কাছ থেকে কেনা এক বা একাধিক ই-ওয়ালেটের মাধ্যমেই ব্যাংক বা এটিএম জালিয়াতির টাকা চলে যেত অ্যাকাউন্টে। সম্প্রতি পর্ণশ্রীর বাসিন্দা এক ব্যক্তি অভিযোগ জানান যে, তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কেওয়াইসি আপডেট করানোর নাম করে তাঁকে কিউআর কোড পাঠানো হয়। সেই ফাঁদে পা দেওয়ার পর প্রথমে ১৪ লক্ষ টাকা তুলে নেয় জালিয়াতরা। তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানালে ওই টাকা জালিয়াতদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছনোর আগেই আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু এর মধ্যেই তাঁর আরও ৬টি ব্যাংক থেকে জালিয়াতরা ২০ লক্ষ টাকা তুলে নেয়। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। তখনই জানা যায় যে, ওই ভুয়ো ওটিপি ব্যবহার করেই জালিয়াতরা ই-ওয়ালেটে টাকা পাঠায়। আবার জালিয়াতরা ফোন করার জন্য এই চক্রের কাছ থেকেই কেনে ভুয়া বা প্রি-অ্যাকটিভেটেড সিমকার্ড।
এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে পুলিশ জানতে পারে, জালিয়াতদের টাকা ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে গিয়েছে কয়েকটি বিশেষ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। সেই অ্যাকাউন্টের সন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ প্রথমে সামশাদ আলির খোঁজ পায়। তার কেওয়াইসি দিয়েই খোলা হয় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট। জানা যায়, তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে ব্যাংকে নিয়ে যায় মূল চক্রী সালাউদ্দিন। ‘ভাড়া’ হিসাবে কিছু টাকার টোপ দিয়ে সালাউদ্দিন তাকে দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে টাকা রাখে। এরকম আরও কিছু শ্রমিক শ্রেণি বা রিকশাচালককে দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে তাতে জালিয়াতির টাকা রাখত সালাউদ্দিন। এভাবে প্রচুর টাকার কারবার করত সে। সালাউদ্দিনকে জেরা করে এবার জালিয়াতদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: আঙুলের ছাপ নকল করে অভিনব ব্যাংক জালিয়াতি, চুঁচুড়া থেকে গ্রেপ্তার উত্তরপ্রদেশের ৪ বাসিন্দা]
অন্যদিকে ভুয়ো লিংক দিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতানোর অভিযোগে দু’জনকে গ্রেপ্তার করল বারুইপুর সাইবার থানা। এদের মধ্যে একজনকে শনিবার এবং অপরজনকে রবিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম কৃষ্ণ ঠাকুর এবং ওহাজাহাট আলম। খোয়া যাওয়া টাকার মধ্যে অধিকাংশই প্রতারিত ব্যক্তি পেয়ে যাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, বারুইপুর এক নম্বর ওয়ার্ডের দে পাড়ার বাসিন্দা সুকমল হালদার গত মাসের ১৪ তারিখ সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগপত্রে তিনি লেখেন, চার ধাপে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। কীভাবে গেল, সেটা তিনি বুঝতে পারছেন না। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিM অপরাধীদের গ্রেপ্তার করেছে।