অর্ণব আইচ: তিনজলায় (Tiljala) সরকারি আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে গৃহকর্তার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ২ যুবককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম শুভ সরদার ও রাহুল হালদার। জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শুভ’র মা দীর্ঘদিন ধরে মৃতের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। শুভ’র যাতায়াত ছিল সেখানে। মৃতকে মামা বলে ডাকত সে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, নগদ অর্থ ও গয়না চুরি করতেই ওই ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছিল অভিযুক্তরা।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। এদিন মৃত জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটের কাছে যেতেই পচা গন্ধ পান প্রতিবেশী ও এক নির্মাণকর্মী। এরপর দরজা ধাক্কা দেওয়ায় তা খুলে যেতেই ভিতর ঢুকে আঁতকে ওঠেন সকলে। দেখেন বিছানার উপর পড়ে রয়েছে জয়ন্তবাবুর গলা কাটা দেহ। দেহটিতে পচন ধরতে শুরু করেছেছে। বিছানায় কালচে হয়ে রয়েছে রক্তের দাগ। সারা ঘর ও আলমারি লন্ডভন্ড। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় পুলিশে। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। তদন্ত শুরুর কয়েকঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। আজই আদালতে তোলা হবে ধৃতদের।
[আরও পড়ুন: নেতা ও মন্ত্রীদের কন্ঠস্বর নকল করে ফোন! টাকা আদায়ের চেষ্টা, গ্রেপ্তার যুবক]
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত জয়ন্ত মুখোপাধ্যায়ের (৪৫) বাবা কর্মসূত্রে এই সরকারি আবাসনের উপর তলার ফ্ল্যাটে আসেন। বেশ কয়েক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। গত এপ্রিল মাসে জয়ন্তবাবুর মায়েরও মৃত্যু হয়। বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। ওই আবাসনের চারতলার বারান্দা ভঙ্গুর হয়ে গিয়েছে। ওই বারান্দা সারানোর জন্যই বৃহস্পতিবার ঠিকাদারের লোকেরা জয়ন্তবাবুর ফ্ল্যাটে আসেন। দরজায় টোকা দিলেও কেউ খোলেনি। তাঁরাই এক প্রতিবেশীকে ডাকেন। তিনি দরজায় ধাক্কা দেন। দরজা খুলে যায়। ভিতরে ঢুকেই পচা গন্ধ পান। উদ্ধার হয় দেহ। পুলিশের অনুমান, গলা কেটে খুন করে জয়ন্তবাবুকে বিছানায় ফেলে দেওয়া হয়। খুনের পর খুনি আলমারিতে কিছু খোঁজে। মোবাইল নিয়ে পালায়। আলমারির ভিতর কী ছিল, তা জানেন না প্রতিবেশীরা। আবার প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন যে, জয়ন্তবাবুর এক আত্মীয়া রয়েছেন, যাঁর সন্তান নেই। ফলে সেই সম্পত্তি জয়ন্তবাবুর পাওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। সেই কারণে খুন কি না, তা নিয়েও প্রথমে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। যদিও বর্তমানে পুলিশ মনে করছেন স্রেফ চুরির উদ্দেশেই হানা দিয়েছিল অভিযুক্তরা। কিন্তু কেন এই নৃশংসতা? বাধা দেওয়ায় প্রাণ গেল জয়ন্তর? নাকি পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।