সুরজিৎ দেব, ডায়মণ্ড হারবার: মগরাহাটে (Magrahat) প্রকাশ্যেই জোড়া খুন। সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর বন্ধুকে প্রথমে গুলি করে ও পরে গলা কেটে খুন করল দুষ্কৃতীরা। আর এই জোড়া খুনকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে ধুন্ধুমার মগরাহাটের মাগুরপুকুর এলাকায়। দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত এবং খুনিদের গ্রেপ্তারির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে আমজনতা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গাড়ি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঘটনাস্থলে মগরাহাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী, ব়্যাফ মোতায়েন করা হয়। দুপুরের পর নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: জ্বালানির জ্বালায় বাস ছুটছে কেরোসিনে, বেলাগাম পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা]
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন আগে ইমারতি সামগ্রী কেনার জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ী জানে আলম মোল্লাকে টাকা দিয়েছিলেন মলয় মাখাল (২৭)। জানে আলমের কাছে মলয়ের পাওনা ছিল ৮০ হাজার টাকা। অভিযোগ, এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও ইমারতি দ্রব্য মেলেনি। টাকা চাইলেও ফেরত দেয়নি জানে আলম মোল্লা। এদিন টাকা ফেরত দেবেন বলে মলয়কে ডেকে পাঠান জানে আলম মোল্লা। মলয়ের সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু সিভিক ভলান্টিয়ার বরুণ চক্রবর্তীও।
বরুণ ও মলয় আসতেই তাঁদের নিজের কারখানায় ঢোকান জানে আলম মোল্লা। সেখানে তাঁদের খুন করা হয়। এদিকে কারখানার সামনে বরুণ-মলয়ের বাইক দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরা জানে আলমকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, কারখানার ভিতরে বসে বরুণ আর মলয় মদ্যপান করছে। কিন্তু জানে আলমের কথা বিশ্বাস হয়নি স্থানীয়দের। কারখানার দরজা ঠেলতেই তারা দেখে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। অভিযোগ, প্রথমে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে দু’জনকে খুন করে পিঠটান দেয় দুষ্কৃতীরা।
এরপরই জানে আলমের গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব হয় জনতা। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় গাড়িও। এই ঘটনার পর থেকে ফেরার অভিযুক্ত জানে আলম মোল্লা।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতকে দেখে শিখুক পাকিস্তান’, আস্থা ভোটের আগে দিল্লির ঢালাও প্রশংসা ইমরানের মুখে]
এর পরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব়্যাফ নামানো হয়। ডায়মণ্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এসডিপিও মিতুন কুমার দে-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে খুন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। গুলি চালানো হয়েছিল কিনা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরিষ্কার হবে। অভিযুক্ত জানে আলম মোল্লাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য বেহালা-সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, মাগুরপুকুর এলাকায় দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ স্থানীয় বাসিন্দারা। মাঝেমধ্যেই এই এলাকায় অশান্তি বাঁধে। তবে প্রকাশ্যে এ ধরনের নৃশংস খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী।