অর্ণব দাস, বারাসত: এক সপ্তাহের মধ্যে ফের প্রকাশ্যে বারাসত (Barasat) সাংগঠনিক জেলা বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব। জেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করলেন পাঁচ জন। জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে পুরসভার টিকিট বিলি, অযোগ্যদের পদে বসানো-সহ একাধিক অভিযোগ তুলে ইস্তফা দিলেন তাঁরা। রবিবার পাঁচজনই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন।
চলতি মাসের ১ তারিখ বারাসত সাংগঠনিক জেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন জেলার ১৫ জন বিজেপি (BJP) নেতা। ফের পাঁচজন পদত্যাগ (Resign)করায় স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। যদিও জেলা বিজেপি নেতৃ্ত্বের দাবি, ভুল বুঝিয়ে পদত্যাগপত্রে সই করানো হয়েছে তাঁদের। ১ মে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে ইস্তফা দেন বিজেপি বারাসত সাংগঠনিক জেলার ১৫ জন সদস্য। এরপর বৃহস্পতিবার হাবড়া ২ দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি বদল করা হয়। আর তারপরই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে প্রতিবাদে নামেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) রাজ্য সফরের মধ্যে এই ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলেছিল জেলা বিজেপির নেতাদের।
[আরও পড়ুন: স্নাতক পরীক্ষায় ‘হিন্দু বিরোধী’ প্রশ্ন! কাঠগড়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়]
এই দুই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের জেলা বিজেপির ৫ জন নেতা পদত্যাগ করলেন। তাঁদের অভিযোগ, অর্থের বিনিময়ে জেলা সভাপতি পুরভোটের টিকিট বিলি করেছেন। এই কারণে জেলার চারটি পুরসভার ১১০ টি আসনের মধ্যে একটিতেও বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হয়নি। বরং বেশিরভাগ আসনেই তিন নম্বর অথবা চার নম্বর হয়েছেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, জেলা সভাপতির আক্রোশের কারণে জেলার সক্রিয় ও বর্ষীয়ান নেতাদের কর্মসূচি থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। নিজের পছন্দসই অযোগ্য লোকেদের পদ বিলি করা হচ্ছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ অন্যান্য পদাধিকারীদেরও এবিষয়ে লিখিত জানিয়েছেন এই পাঁচ পদত্যাগকারী নেতারা। স্বভাবতই গেরুয়া শিবিরে লাগাতার চলা কোন্দলে অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে নেতাদের।
[আরও পড়ুন: ‘পুলিশকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করা কুকুরের অপমান’, বিতর্ক আরও বাড়ালেন সেলিম]
রবিবার পদত্যাগী বিজেপি নেতা চন্দন দাস বলেন, “যোগ্য লোকেদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। দল দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আগামী দিনে আরও অনেকে এভাবেই ইস্তফাপত্র জমা দেবে।” যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি তাপস মিত্রর দাবি, “পদত্যাগীরা অনেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের ভুল বুঝিয়ে পদত্যাগপত্রে সই করানো হয়েছিল। তাঁরা দ্রুত তা প্রত্যাহার করবেন বলে জানিয়েছেন। তাই তাঁদের তিনদিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার না করলে তা গ্রহণ করে ওই জায়গায় নতুন সদস্য নিয়োগ করা হবে।”