সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বঙ্গে ভোট প্রচারের শুরুর দিকে শাসক দলের বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের মূল অস্ত্র ছিল সন্দেশখালি। কিন্তু 'স্টিং ভিডিও' প্রকাশ্যে আসার পরই এই ইস্যুতে অনেকটা 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি' অবস্থান বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে এসে অমিত শাহর মতো হেভিওয়েট নেতার এ নিয়ে নীরবতাই তার প্রমাণ। সোমবার কৃষ্ণনগরের রোড শো-য় সন্দেশখালি 'স্টিং' ভিডিও নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের মুখে পড়ে ঘুরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উপর দায় চাপালেও দুর্গাপুরের জনসভায় তিনি সন্দেশখালির নাম পর্যন্ত মুখে আনলেন না। বরং তোষণ, অনুপ্রবেশের মতো জাতীয় স্তরের একাধিক ইস্যুতেই রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করলেন অমিত শাহ।
সোমবার লোকসভা ভোটের (2024 Lok Sabha Election) জোড়া প্রচারে বঙ্গ সফরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রথমে তিনি কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়ের সমর্থনে রোড শো করেন। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সন্দেশখালি নিয়ে গোটা দায় চাপিয়েছেন রাজ্য সরকারের উপর। মহুয়াগড়ে দাঁড়িয়ে 'রানিসাহেবা' অমৃতা রায়ের জয় নিশ্চিত বলে প্রত্যয়ী বার্তা দেন শাহ। এর পর তিনি চলে যান দুর্গাপুরে। তিলক ময়দানে বর্ধমান-দুর্গাপুরের (Bardhaman Durgapur) বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের সমর্থনে জনসভা করেন।
[আরও পড়ুন: সন্দেশখালি ‘স্টিং’ বিতর্কে মহুয়া গড়ে মুখ খুললেন শাহ, ‘ডিপফেক’, দাবি শুভেন্দুর]
আর সেই সভা থেকে একাধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন অমিত শাহ (Amit Shah), কিন্তু মুখে আনলেন না সন্দেশখালি ইস্যু। তৃণমূল বিরোধিতায় চিরাচরিতভাবেই তুললেন অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ। আর তা নিয়ে CAA-র সমর্থন চাইলেন উপস্থিত জনতার কাছ থেকে। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার সুফল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অন্যতম সাফল্য বলে দাবি করলেন শাহ। সংখ্যালঘুদের তোষণ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন তিনি। অভিযোগ করলেন, দোষীদের আড়াল করে রাজ্যের সরকার, এমনকী দুষ্কৃতীরা পাতালে লুকিয়ে থাকলেও তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে তাদের পাতাল থেকে খুঁজে এনে উলটে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে বলে হুঙ্কার দিলেন শাহ। নিশানা করলেন দুর্নীতি ইস্যুকেও। বাংলার মন্ত্রীদের ঘরে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যায় বলে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না।
[আরও পড়ুন: অভিষেকের সভার আগে পাণ্ডুয়ায় বোমা ফেটে কিশোরের মৃত্যু, গুরুতর জখম আরও ২]
এই সভা থেকে সন্দেশখালির (Sandeshkhali) নাম না করেও বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শাহজাহানকে উপুর্যপরি দুষলেন। সম্প্রতি এই সন্দেশখালির 'স্টিং' অপারেশন নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যে শোরগোল পড়েছে, তা নিয়ে শাহের নীরব ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। এই ঘটনায় সন্দেশখালির বিজেপি নেতার নাম জড়ানোর ফলেই কি প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগে জল মাপছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? নইলে রাজ্যে এসেও কেন সাম্প্রতিক বিষয়ে চুপ রইলেন? প্রশ্ন এড়ানো যাচ্ছে না।