বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ‘ঘরের ভোট ঘরে ফেরাও’ – নয়া স্লোগান নিয়ে উত্তরের তিন জেলায় ঘর গোছাতে নেমেছে বামেরা (Left Front)। দলের সক্রিয় সদস্যদের দেওয়া হচ্ছে বুথ সামলানোর দায়িত্ব। ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্য সভা করে ভোটপ্রচার অভিযানের সূচনা করবেন মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়রা। যদিও চলে যাওয়া সমর্থকদের ফেরাতে বাড়িতে ঘুরে ঘরোয়া প্রচার শুরু হয়েছে আগেই। বামেরা তৎপর হতে স্বস্তির ছায়া ঘাসফুল শিবিরে। রাজনৈতিক মহলের দাবি,আসন্ন লোকসভা ভোটে (2024 Lok Sabha Election) বামেরা নিজেদের কিছুটা ভোট ঘরে ফেরাতে সক্ষম হলে তৃণমূলের পক্ষে বিজেপিকে পর্যুদস্ত করার পথ আরও মসৃণ হবে। ক্ষয়িষ্ণুতার অপবাদ থেকে মুক্তি পাবে বামেরাও।
উত্তরবঙ্গের (North Bengal) জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও দার্জিলিং জেলায় বাম কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে জোর প্রচার চলছে ‘ঘরের ভোট ঘরে ফেরাও’ স্লোগান তুলে। যে কর্মী-সমর্থকরা গত লোকসভা নির্বাচনে পদ্ম শিবিরে ভোট তুলে দিয়েছে, এমনকী বিজেপির হয়ে প্রকাশ্যে প্রচার করেছে মূলত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর উপরে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে সিপিএম (CPM) এবং আরএসপি (RSP) নেতৃত্ব। তাদের বাম শিবিরে ফেরাতে পার্টি সদস্যদের নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠক করে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। দেরিতে হলেও বাম নেতৃত্ব স্বীকার করেছেন, তাদের কর্মী-সমর্থকদের বড় অংশ মুখ ফেরানোয় উত্তরে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। সেই সমর্থদের মাত্র ১৫ শতাংশকে ফেরানো সম্ভব হলেই লোকসভা আসন বিজেপির হাতছাড়া হতে বাধ্য।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ার হয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে ভারতীয়রা! অবশেষে মানল মোদি সরকার]
সিপিএমের দার্জিলিং (Darjeeling) জেলা কমিটির সদস্য তাপস সরকার বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় কয়েকজন কর্মী ফিরেছেন। যে কারণে বিজেপি সুবিধা করতে পারেনি। এবার লোকসভা ভোটে ১৫ শতাংশ ভোট ফেরাতে পারলে অকল্পনীয় ঘটনা ঘটতে পারে।” তিনি জানান, সেজন্য বাড়িতে ঘুরে যোগাযোগ বাড়ানো এবং তাঁদের নিয়ে বসে ঘরোয়া প্রচার চলছে। সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯ ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়ির লাটাগুড়িতে প্রথম নির্বাচনী প্রকাশ্য সমাবেশে থাকবেন মহম্মদ সেলিম (Md Selim), মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। যদিও দলীয় নেতৃত্ব জানাতে ভোলেননি তারা মূলত ঘরোয়া প্রচারে বেশি জোর দিয়েছেন। সংঘ পরিবারের লোকজন যেন গত লোকসভা নির্বাচনের মতো তাঁদের নজরে সিঁধ কেটে ভোট তুলে নিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য বুথস্তরে প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে। ধূপগুড়ির সিপিএম নেতা জয়ন্ত মজুমদারের বক্তব্য, “বামেরা মোটেও ক্ষয়িষ্ণু নয় সেটা ভোটের অঙ্কে প্রমাণ করাই এবার বড় কাজ।”
[আরও পড়ুন: সমকাম প্রেমে আঘাত? একসঙ্গে আত্মঘাতী দুই বান্ধবী! চন্দ্রকোণার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য়]
একই লক্ষ্য নিয়ে ঘরোয়া প্রচার শুরু করেছে আরএসপি (RSP)। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্মল দাসের কথায়, “বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়া হবে না। ওরা ধর্মীয় বিভাজন এনে বিরাট সর্বনাশ করছে। মিথ্যা প্রতিশ্রুতির উপরে দলটি চলছে। ওদের নির্মূল করাই আমাদের লক্ষ্য।” বামেদের এমন তৎপরতায় অনেকটাই স্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। কারণ, তারা জানেন বামেদের ভোট বৃদ্ধি পেলে বিজেপি বিপাকে পড়বে। তৃণমূল নেতা মৃদুল গোস্বামী বলেন, “বামেদের ঘর ভেঙে বিজেপি মাথা তুলেছে। বামেরা ওদের ভোট কিছুটা ফেরাতে পারলে বিজেপি দুর্বল হবে।”