অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: তৃণমূলের লিফলেট নয়। ভোটের ঠিক আগে 'ভয়েস অফ খড়গপুর' নামে একটি লিফলেট সাড়া জাগিয়েছে রেলনগরী খড়গপুর শহরের বেশ কিছু এলাকায়। বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আবেদন জানিয়ে ৬ পাতার এই লিফলেট বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন তৃণমূলের কর্মীরা। এই লিফলেটে তিনটি কিস্তিতে দেশ থেকে শুরু করে রাজ্যের একাধিক বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলির মধ্যে অন্যতম - ‘‘উদ্ধার কালো টাকার প্রত্যেক দেশবাসীকে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন কোনও কালো টাকা উদ্ধার হয়নি। বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কৃষকদের আয় ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হবে। বাস্তবে দ্বিগুণ ছেড়ে দিন। ২০২২ সালে প্রতিদিন অন্তত ৩০ জন করে কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। বিজেপি প্রচার করছে গত ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। আর রাষ্ট্রসংঘ (UN)বলছে, ভারতে গত ১০ বছরে সংখ্যাটা অনেক কম। মাত্র ১৪ কোটি।’’
মূলত তৃণমূলের (TMC) মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর উদ্যোগে এই সংগঠন তৈরি করা হয়েছে। খড়গপুর (Kharagpur) পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড-সহ ১০, ৩৪, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ি বাড়ি এই লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। বাংলায় লেখা এই লিফলেট রীতিমতো সাড়া জাগিয়েছে অনেক এলাকায়। যদিও এই ধরনের লিফলেট পাননি বলে জানালেন তৃণমূলের খড়গপুর শহর নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান কল্যাণী ঘোষ, কোর কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন বিধায়ক প্রদীপ সরকার-সহ আট নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর দীপেন্দু পাল-সহ অনেকেই। তবে এই ব্যাপারে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অপূর্ব ঘোষ বলেন, ‘‘দলের লিফলেটের সঙ্গে ভয়েস অফ খড়গপুরের ছাপানো লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: ‘দরকারে মেরে দাও’, তিন ‘আন্দোলনকারী’র রহস্যময় কথাবার্তা, ভাইরাল সন্দেশখালির অডিও]
পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বি হরিশ জানাচ্ছেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডের বাঙালি পরিবারে এই লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া দলের লিফলেট তো রয়েছেই।’’ এদিকে তৃণমূলের খড়গপুর শহর নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান কল্যাণী ঘোষ বলেন, ‘‘এরকম কোনও লিফলেট পাইনি। মনে হয় দলের সঙ্গে এই সংগঠনের বিশেষ কোনও সম্পর্ক নেই।’’ এই ব্যাপারে এই সংগঠন তৈরির মূল হোতা দেবাশিস চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘আমি উদ্যোগ নিয়ে এই সংগঠন তৈরি করেছি। সংগঠনে সমাজের বিভিন্ন স্তরের ও পেশার মানুষ রয়েছেন। তাঁরা আপাতত লোকসভা নির্বাচনকে (2024 Lok Sabha Election) সামনে রেখে লিফলেট তৈরি করেছেন। পরে খড়গপুর শহরের বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলন গড়ে তুলবেন।’’
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে জ্বলে উঠল নন্দীগ্রাম, কাঁথির জনসভা থেকে ‘বদলা’র হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর]
খড়গপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, ‘‘আমরা এরকম কোনও লিফলেট পাইনি। আমরা ওয়ার্ডগতভাবে লিফলেট ছাপিয়ে ও প্রার্থী জুন মালিয়ার কাজের রিপোর্ট কার্ড নিয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিচ্ছি।’’ একই বক্তব্য পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়শ্রী পালের স্বামী দীপেন্দু পালের। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এরকম কোনও লিফলেট পাইনি।’’ তবে জানা গিয়েছে, এই সংগঠনের পক্ষ থেকে খড়গপুর শহরের বিভিন্ন বাজার এলাকায় এই লিফলেট (leaflet) বিতরণ করা হয়েছে।