বাবুল হক, মালদহ: নিজের ফেসবুক পেজ নিজেই চালাচ্ছেন তৃণমূল (TMC) প্রার্থী। মিলছে সাড়াও। এমনই দাবি তাঁর। ফেসবুকে (Facebook) ফলোয়ার্সের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়, অন্তত ৪২ হাজার। আর এই ফলোয়ার্সের কাঁধে ভর করেই সোশাল মিডিয়ায় (Social Media) চলছে তাঁর ভোটপ্রচার। তিনি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রাক্তন আইপিএস। রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিআইজি। অভিনেতা, নির্দেশক। চিত্রনাট্যের লেখকও বটে। একাধারে অনেক কিছুই। সেই নিরিখে আগে থেকেই ‘ফেসবুক সেলিব্রিটি’র একটা তকমা ছিলই। এবার নয়া সংযোজন, তিনি মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী। প্রসূন বন্দোপাধ্যায়ের দাবি, প্রচার ঝড় তুলতে তাঁর অন্যতম হাতিয়ারও বটে এই সোশাল সাইট। ভোট প্রচারের ছবি বা ভিডিও পোস্ট করলেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভিউয়ার্স সংখ্যা এক লক্ষ ছাপিয়ে যায়। দাবি তৃণমূল প্রার্থীর। তিনি বলছেন, “প্রচারের পর রাতে ফেসবুকে কিছু সময় দিই।”
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের (2024 Lok Sabha Polls) ভোটযুদ্ধের আঁচ সোশাল সাইটেও। ফেসবুকে প্রচারে ঝড় তুলতে মরিয়া বিজেপি ও তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তবে ফলোয়ার্সের অভাবে মালদহ উত্তরে (Maldah Uttar) অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। তবে হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু। ফেসবুকে খগেনের ফলোয়ার্সের সংখ্যা ১৩ হাজার, প্রসূনের চেয়ে অনেকটাই কম। তবে তাঁর ফেসবুক পেজের পোস্টে লাইক, কমেন্টস, শেয়ার ও ভিউয়ার্স যথেষ্টই থাকছে। বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু বলেন, “সোশাল সাইটে ভোট প্রচারের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের চেয়ে আমরা অনেক এগিয়ে রয়েছি। কী কী কাজ করেছি, তাঁর খতিয়ান তুলে ধরেছি। শিক্ষিত যুবরাও মোদিজির সঙ্গে রয়েছেন।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যে প্রথম দফার ভোটে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে তো? সংশয়ে কমিশন কর্তারাও]
দেশজুড়ে গেরুয়া শিবিরের আইটি সেল সামাজিক মাধ্যমে অনেক কিছুই পোস্ট করছে, যা নিয়ে মাঝেমধ্যে হইচই হয়। কিন্তু মালদহ উত্তর কেন্দ্রে অবশ্য বিজেপির আইটি সেলের তরফে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে তেমন কোনও পোস্ট এখনও নজর কাড়েনি। খগেন মুর্মুর দাবি, ফেসবুকে আইটি সেলের তরফেও পদ্ম-প্রচার চলছে। কিন্তু সোশাল সাইটে বাম-কংগ্রেস কোথায়? সিপিএম (CPM) ফেসবুকে সক্রিয় – নেটিজেনদের মত এমনটা হলেও বাস্তব ছবিটা হল, মোবাইলের স্ক্রিনে এখনও তাঁদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। মালদহ সিপিএমের পেজে তাঁদের সংগঠনের কর্মসূচি সংক্রান্ত কিছু পোস্ট দেখা গেলেও নেই জোটপ্রার্থীর ভোট প্রচার।
কংগ্রেসের অবস্থাটা আরও শোচনীয় বলে জেলার রাজনৈতিক মহল মনে করছে। যে জেলায় প্রয়াত একজন নেতার নামে বারবার ভোট করে কংগ্রেস, সেই বরকত গনি খান চৌধুরীর মালদহে কিন্তু আজও কংগ্রেস আছে সেই পুরনো দিনেই। জেলায় একাধিক পুরনো নেতা মোবাইলেই সড়গড় নন বলে দাবি তরুণদের একাংশের। এই ডিজিটাল জমানায় সোশাল মিডিয়ার দৌলতে রিলস (Reels) বানিয়ে ছোটখাটো সেলিব্রিটি বনে যাচ্ছেন পাড়ার চায়ের দোকানদারও। এমন সময়ও কার্যত মান্ধাতার আমলে বন্দি মালদহের কংগ্রেস নেতারা! ওই দলের তরুণ কর্মীরাও তা মানছেন। অভিযোগ, সোশাল সাইটে সার্চ করেও খুঁজে পাওয়া যায় না মালদহ উত্তরের কংগ্রেস নেতাদের ফেসবুক প্রোফাইল কিংবা পেজ। ঘাসফুল শিবিরের আইটি সেলের একজন করে প্রতিনিধি রয়েছেন ব্লকে ব্লকে। কংগ্রেসের এমন কোনও প্রতিনিধি জেলার কোনও ব্লকে নেই বলে দলীয় সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে শহরে উদ্ধার লক্ষ লক্ষ টাকা, চেতলায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে আয়কর হানা]
মালদহ উত্তর কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক আলমের একটি ফেসবুক প্রোফাইল রয়েছে বটে। যে সময় তিনি বিধায়ক ছিলেন, সেই সময় প্রোফাইলটি খুলেছিলেন। সেই ফেসবুক প্রোফাইলে তাঁর নামের পাশে এখনও ‘এমএলএ’ উল্লেখ রয়েছে। তাতে বন্ধুর সংখ্যা মাত্র চার হাজার! ফলোয়ার্স (Followers) কেউ নেইই।