সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: লোকসভা ভোটের মাঝেই আরেকদফা প্রার্থী ঘোষণা করল কংগ্রেস। মোট চারটি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে বাংলার কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রটি। এই কেন্দ্র থেকে লোকসভার লড়াইয়ে প্রার্থী করা হয়েছে ঊর্বশী ভট্টাচার্যকে। কাঁথিতে একসময়ে দলের দায়িত্বে ছিলেন পেশায় আইনজীবী ঊর্বশী। এবার লোকসভা ভোটে চেনা আসন থেকেই লড়বেন তিনি। আর এই আসনে নাম ঘোষণা করে ৪২ আসনেই প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করল বাম-কংগ্রেস। কাঁথিতে প্রতিপক্ষ তৃণমূলের উত্তম বারিক, বিজেপির সৌমেন্দু অধিকারী।
কাঁথির কংগ্রেস প্রার্থী ঊর্বশী ভট্টাচার্য।
দলীয় সূত্রে খবর, ঊর্বশী ভট্টাচার্য পেশায় আইনজীবী। কলকাতার বাসিন্দা। কর্মক্ষেত্রও কলকাতা। দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত। কংগ্রেসের 'ওয়ার রুম'-এর চেয়ারম্যান হওয়ার পাশাপাশি তিনি কাঁথিতে (Kanthi) সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। মাস কয়েক আগে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর সেই কারণেই চব্বিশের লোকসভা ভোটে (2024 Lok Sabha Polls) এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে কাঁথিতে হাত শিবিরের একাধিক মুখ থাকা সত্ত্বেও কেন 'বহিরাগত' ঊর্বশীকে প্রার্থী করা হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
[আরও পড়ুন: বারবার বিতর্কে জড়ানো মহুয়া কত সম্পত্তির মালিক? জেনে নিন খতিয়ান]
বাম-কংগ্রেসের জোট দ্বন্দ্বে কাঁথি আসন নিয়ে জটিলতা ছিল। প্রার্থী ঘোষণার আগেই সিপিআই এখানে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছিল। কংগ্রেসের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব কাঁথিতে প্রার্থী চেয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের (Congress) অফিসে বিক্ষোভ শুরু করে। অবশেষে জোটের তরফে কাঁথিতে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। প্রার্থী হিসেবে কাঁথি লোকসভার অবর্জাভার ঊর্বশী ভট্টাচার্য এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক মাসুদ মল্লিকের নাম সামনে আসে। তবে ঊর্বশীর নামেই শেষমেষ প্রার্থী হিসেবে সিলমোহর দেয় প্রদেশ কংগ্রেস।
[আরও পড়ুন: সম্মোহনের শক্তি নিয়ে আসছে ‘নয়ন রহস্য’, ফেলুদার যত কাণ্ড গরমের ছুটিতে, দেখুন ট্রেলার]
বহিরাগত প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তাবে কংগ্রেসের মধ্যেই শুরু হয়েছে অন্তর্দন্দ্ব। বাম কর্মীরা কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতেই রাজি হচ্ছেন না। বাম কর্মীদের দাবি, কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রে অধিকারী পরিবার বনাম তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এখানে বামফ্রন্ট প্রার্থী দিলে বিজেপি (BJP) ও তৃণমূল কংগ্রেসে ভোটে ভাগ বসাতে পারত। কারণ, বিধানসভার ফলাফলে নজর দিলেই দেখা যাবে খেজুরি, ভগবানপুর, উত্তর কাঁথি এবং দক্ষিণ কাঁথি - এই চারটি বিধানসভায় সিপিএমের (CPM) ভোটে বিজেপি জয়লাভ করেছে। ফলে লোকসভায় সিপিএমের নিজস্ব প্রার্থী থাকলে বিজেপির সেই ভোটে থাবা বসানো সুবিধা হত বামেদের। সেই জায়গায় কংগ্রেসের নিজস্ব ভোট সিপিএমের থেকে অনেকটাই কম। ফলে দলীয় প্রার্থী না থাকায় ফের বামের ভোট রামে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বাম কর্মীরা। তাছাড়া ভূমিপূত্র প্রার্থী না হওয়ায় কংগ্রেস কর্মীরাও সেভাবে প্রচারে নামতে রাজি নয় বলে কংগ্রেস নেতৃত্বদের জানিয়ে দিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর।