সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভোটের ময়দানে ডিম-ভাত বনাম মাছ-ভাত! রাজনৈতিক সভায় কর্মীদের পেট পুরে খাওয়ানো নিয়ে সরগরম পুরুলিয়ার (Purulia) রাজনীতি। লক্ষ্মী বারে বিজেপির শক্তি কেন্দ্র প্রমুখ সম্মেলনে পুরুলিয়া শহরের রবীন্দ্রভবনে কর্মীদের জন্য মাছ ভাতের আয়োজন করেছিল পুরুলিয়া জেলা বিজেপি (BJP)। সঙ্গে ছিল একটি পাঁচমেশালি ঝাল-ঝাল সবজিও। আর তাতেই গোল বাঁধল। কর্মীদের মধ্যাহ্নভোজনের মাছ-ভাতও ঢুকে পড়ল রাজনীতির ময়দানে। রবীন্দ্র ভবনে বিজেপির কর্মীরা পেটপুরে খাওয়াদাওয়া শুরু করতেই পুরুলিয়া শহর এমনকি সমগ্র জেলার শাসক শিবিরেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ল এই খবর। শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই সভায় যোগ দিতে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
আসলে তৃণমূলের (TMC) কোনও সভা-সমিতি বিশেষত কলকাতায় ২১ জুলাই বা ব্রিগেডে ডিম-ভাত খাওয়ানো হয়ে থাকে। এই নিয়ে কম কটূক্তি, বক্রোক্তি, ব্যঙ্গ শুনতে হয়নি শাসকদলকে। সামাজিক মাধ্যম থেকে হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp)। সেই সঙ্গে সরাসরি আক্রমণ করা হয় শাসক দলকে। এদিন বিজেপি কর্মীদেরকে মাছ-ভাত খাইয়ে বিতর্ক থেকে দূরে থাকতে পারেনি গেরুয়া শিবির। জয়পুরের কাঁঠালটাড় থেকে বিজেপির এই সম্মেলনে এসেছিলেন দলীয় কর্মী গোলক মাহাতো। একইভাবে অযোধ্যা পাহাড় থেকে আসেন তরণী সেন মাহাতো। তাঁদের কথায়, “সেই কখন ঘর থেকে বার হয়েছিলাম। কর্মিসভায় এসে দুটো খেতে পেয়ে যেন একটু শান্তি হল।”
[আরও পড়ুন: ‘খুন করেছে দাদা, আমি নির্দোষ’, যোগীরাজ্যে জোড়া হত্যায় দাবি অন্য অভিযুক্তের]
রবীন্দ্র ভবনের পাশেই পুরুলিয়া পুরসভা। ফলে বিজেপির এই মাছ-ভাত খাওয়ানোর খবর পুরসভার কানে পৌঁছে যায় দ্রুত। তৃণমূল পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “কর্মীরা দূর থেকে এসে সভা-সমিতিতে যোগদান করবেন। সকাল থেকে দলের কাজে যুক্ত থাকবেন। দল তাদেরকে খাওয়াদাওয়া করাবে না, এটা কখনো হয়? আর এই কাজ করতে গিয়ে অর্থাৎ কর্মীদের ডিম-ভাত খাওয়াতে গিয়ে আমাদের নামে নানাভাবে কুৎসা করা হয়েছে। বিজেপি এই কুৎসা-কটূক্তি করেছে। সেই বিজেপি তাদের কর্মসূচিতে কর্মীদের মাছ- ভাত খাওয়াচ্ছে। এই বিষয়ে আমরা একটা কথাও বলব না। শুধু বলব যে সমালোচনা করেছিলেন, যে রাজনীতি করেছিলেন সেটা ভুল। এগুলোকে নোংরা রাজনীতি বলে।”
[আরও পড়ুন: বিশৃঙ্খলা হতে পারে, ভোটের মুখে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে স্থগিতাদেশে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট]
তবে এই বিষয়ে বিজেপি সেই তৃণমূল কংগ্রেসকেই পাল্টা আক্রমণ করেছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী এদিন কর্মীদের মাছ-ভাত খাওয়া শেষে বলেন, “ওরা দুর্নীতির টাকায় কর্মীদেরকে ডিম-ভাত খাওয়াতো। আর আমরা নিজেরা চাঁদা করে কর্মীদের মাছ-ভাত খাওয়াচ্ছি। এটাই বড় পার্থক্য।” তবে পার্থক্য যাই থাক না কেন। পুরুলিয়ায় ভোটের আবহে ডিম-ভাত ও মাছ-ভাতের লড়াই জমজমাট।