সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম ঢেউয়ে জন্ম, তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু! করোনায় (Covid) শিশুমৃত্যুর মর্মান্তিক সাক্ষী হল দেশের রাজধানী শহর দিল্লি (Delhi)। এমনিতে ভারতের অন্য বড় শহরের মতোই দিল্লিতেও হুড়মুড় করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। তারচেয়ে বড় কথা, ধীরে ধীরে হলেও বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত চারদিনে সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৯৭ জনের। এদের মধ্যে ৭ জনই শিশু। যাদের বয়স ১৮ বছরের কম। এমনকি ৩ জনের বয়স এক বছরেরও কম।
এভাবে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্কিত চিকিৎসক মহল। শোকগ্রস্ত পরিবারগুলি। বাবা-মায়ের চোখের জল থামছে না। একটি তিন মাসের কোলের মৃত্যুর পর পরিবারের বক্তব্য, আমরা কেউ সংক্রমিত হইনি। তবুও আমাদের সন্তান কীভাবে সংক্রমিত হল বুঝতে পারছি না। ওয়াজিরাবাদের বাসিন্দা শিশুর পিতা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, পরমানন্দ হাসপাতালে রুটিন চেকআপের জন্য এনেছিলাম। সেখানেই ওর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর এলএনজেপি হাসপাতালে ভরতি করি। ৯ তারিখে মৃত্যু হয়।
[আরও পড়ুন: কোভিড গবেষণায় বড় সাফল্য, গুরুতর অসুস্থতার জন্য দায়ী জিনের খোঁজ পেলেন বিজ্ঞানীরা]
শিশুটির বাবা বলেন, “যখন আমাদের মেয়ে জন্মেছিল ডাক্তার বলেছিল ওর মুখে নোংরা জল ঢুকে গিয়েছিল। পরে তা থেকে যে সমস্যা হয় সেটা ঠিক হয়ে গিয়েছিল।” শিশুর বাবা আরও জানান, ”চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন, ওর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম ছিল তাই ও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে।”
৭ মাসের এক শিশুরও মৃত্যু হয়েছে কোভিডে। শিশুটি থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্য বাবা আক্রান্ত হওয়ার পরেই শিশুটি আক্রান্ত হয় বলে জানা গিয়েছে। পেশায় ই-রিক্সাচালক বাবা বলেন, আমার যেদিন পজিটিভ রিপোর্ট আসে, সেই দিনই সন্তানেরও রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
৭ মাসের শিশুটির জন্ম হয়েছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়। মৃত্যু হল তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর। শিশুটির করোনার পাশাপাশি নিউমোনিয়া এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যাও দেখা গিয়েছিল। ১১ জানুয়ারি মারা যায় ৭ মাসের এই শিশুটি।
[আরও পড়ুন: করোনা সাধারণ ফ্লুয়ের মতোই! মাস্ক-ভ্যাকসিনে শিথিলতা শুরু ইউরোপে]
মৃত শিশুদের মধ্যে আরেকজনের বয়স ছিল তিন মাস। শিশুটি সম্প্রতি জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে দেখে তাকে এলএনজেপি হাসপাতালে নিয়ে আসেন বাবা-মা। তবে এই শিশুটির হার্টে ফুটো ছিল। হাসপাতালে ভরতি করার সময় সে করোনা নেগেটিভ ছিল। পরে চিকিৎসা চলাকালীন পজিটিভ রিপোর্ট আসে শিশুটির।
দিল্লিতে গত ৪ দিনে যে ৯৭ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে ৭০ জন করোনার টিকা নেননি। ১৯ জনের টিকার প্রথম ডোজ নেওয়া ছিল।৮ জনের দু’টি ডোজই নেওয়া ছিল।