অর্ণব আইচ: অনলাইন ট্রেডিং জালিয়াতির ফাঁদে পড়ে টাকা খোয়ান চেন্নাইয়ের এক তরুণী। টাকা চাইতে গিয়ে কলকাতার তিন যুবকের হুমকির মুখেও পড়েন তিনি। শেষপর্যন্ত টাকা ফেরত না পেয়ে আতঙ্কে ওই তরুণী চেন্নাইয়ে নিজের ফ্ল্যাটেই আত্মঘাতী হন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে একবালপুরে হানা দিয়ে তিন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করলেন চেন্নাই পুলিশের আধিকারিকরা।
পুলিশ (Kolkata Police) জানিয়েছে, ধৃত তিন যুবকের নাম আমানুল্লাহ খান, মহম্মদ শাহজাহান ও ফয়জল ইসলাম। কয়েক মাস আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই তিনজনের সঙ্গে পরিচয় হয় চেন্নাইয়ের পর্তুগিজ চার্চ স্ট্রিটের বাসিন্দা ১৯ বছরের তরুণী মহালক্ষ্মীর। চেন্নাইয়ের মুথিয়ালপেট থানায় মহালক্ষ্মীর মা এ শান্তি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, তাঁর সঙ্গে স্বামীর বিচ্ছেদ চলার কারণে তিনি দুই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে থাকেন। ছোট মেয়ে বিশেষভাবে সক্ষম। গত ২ এপ্রিল রাত একটা নাগাদ তিনি দেখেন, বড় মেয়ে মহালক্ষ্মী তখনও ঘুমোননি। মোবাইলে চোখ রয়েছে তাঁর। মেয়ে মাকে বলেন, তিনি অ্যালর্ম সেট করে ঘুমোতে যাবেন। এর পর মা ও অন্যরা ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর পাঁচটা নাগাদ মায়ের ঘুম ভেঙে যায়। পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন, সিলিং থেকে গলায় দোপাট্টা দিয়ে ঝুলছেন তাঁর তরুণী কন্যা। গলার ফাঁস কেটে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ ও পরিবারের লোকেরা তরুণীর মোবাইল পরীক্ষা শুরু করতেই সামনে আসে বিষয়টি।
[আরও পড়ুন: ‘না জেনে লিখে এনে বড় বড় ভাষণ’, নাম না করে শাহর কবিপ্রণাম নিয়ে কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রীর]
ইনস্টাগ্রাম পেজ খুলতে দেখা যায়, মহালক্ষ্মী একজনকে অনলাইন ট্রেডিংয়ের জন্য ৩০ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। থানায় মা শান্তির অভিযোগ অনুযায়ী, অভিযুক্তরা তরুণীকে ৩০ হাজার টাকা লগ্নি করলে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে ৩৭ হাজার টাকা ফেরত দেবে বলে জানায়। কিন্তু বেশ কিছুদিন কেটে যাওয়ার পরও তারা টাকা ফেরত দেয়নি। উলটে অনলাইনে টাকা চেয়ে হুমকির মুখে পড়েন তরুণী। কোনওমতে জোগাড় করা ওই টাকা অনলাইন জালিয়াতরা যে হাতিয়ে নিয়েছে, তরুণী তা বুঝতে পারেন। শেষ পর্যন্ত আতঙ্কেই গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন।
[আরও পড়ুন: কসবার নার্সিংহোমে লিফট দুর্ঘটনায় মৃত্যু মহিলা চিকিৎসকের, সংকটজনক স্বামী]
মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মুথিয়ালপেট থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখেই চেন্নাই পুলিশ (Chennai Police) অভিযুক্তদের হদিশ পায়। একবালপুর থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তারির পর মঙ্গলবার তাদের আলিপুর আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের ১৪ মে পর্যন্ত ট্রানজিট রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। তাঁদের চেন্নাইয়ে নিয়ে গিয়ে জেরা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।