সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘কন্যা দায় বড় দায়’। বিহারের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আজও এমনটাই মনে করেন অনেকে। অবশ্য তার কারণও রয়েছে। ওই রাজ্যে ভাল ছেলের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে গেলে যে পরিমাণের পণের দাবি উঠে আসে তা শুনলে ভিরমি যাওয়াও আশ্চর্যের কিছু নয়। তাই ধরে বেঁধে বিয়ে দাও। প্রতিবেশী রাজ্যে যার চালু নাম ‘পকড়বা শাদি’। জামাইকে ধরেবেঁধে এনে ‘কন্যাদায়গ্রস্ত’ বাবা হাঁপ ছাড়ছেন। তাদের এই ‘দৌরাত্ম্যে’ রাতের ঘুম উড়েছে তথাকথিত ‘এলিজেবল ব্যাচেলর’দের। আতঙ্কে রয়েছে তাঁদের পরিবারও।
তা কী এই ‘পকড়বা শাদি’?
বিহারে ক্রমশই বাড়ছে ‘পকড়বা শাদি’। কারণ আর কিছুই নয় পণপ্রথা। ওই রাজ্যে আজও সুপাত্রের জন্য দাম হাঁকা হয়। আদরের মেয়ের জন্য যোগ্য বর খুঁজতে ঘাম ছুটে যায় পাত্রীপক্ষের। মোটা অঙ্কের পণ দিয়ে জামাই আনার ক্ষমতা সবার থাকে না। ফলে পথ না পেয়ে পকড়বা শাদির উপরেই ভরসা রাখত হয়। পকড়বা শাদিতে পণ এড়াতে ভাল ছেলের সন্ধান পেলে, মেয়ের অভিভাবকরা পাত্রকে অপহরণ করে নিয়ে যান। তারপর বন্দুকের সামনে মেয়ের সঙ্গে জোর করে তাঁর বিয়ে দেন। প্রাণপ্রিয় মেয়ের জন্য এটুকু অপরাধকে কিছুটা হলেও স্বীকৃত সেখানকার অধিকাংশ মানুষের কাছে। ফলে সামাজিক বাধ্য হয়ে এই সম্পর্ক মেনে নিতে হয় ছেলেকে।
[বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের দরজায় ধরনা, পুড়ে মরার হুমকি মহিলার]
পরিসংখ্যান বলছে ২০১৭ সালে ৩ হাজার ৪০৫ জন ছেলেকে জোর করে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য করা হয়েছে। গত কয়েকবছর থেকেই গড়ে প্রায় ৩ হাজার যুবকদের অপহরণ করে ছাদনাতলায় নিয়ে গিয়েছে পাত্রীর পরিবার। পুলিশ রেকর্ড থেকে জানা গিয়েছে, বিহারে বিয়ের মরশুমে প্রতিদিন গড়ে ৯ থেকে ১০টি ‘পকড়বা শাদি’ হয়। তাই এবছর বিয়ের মরশুম শুরু হওয়ার আগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। কয়েকদিন আগেই এক ইঞ্জিনিয়ারকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পিঁড়িতে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ওই ভিডিও ভাইরাল হয় নেট দুনিয়ায়।
The post পাকড়াও করে বিয়ে, রীতির গেরোয় বিহারে অপহৃত ৩০০০ পাত্র appeared first on Sangbad Pratidin.