সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভোটমুখী বাংলাদেশে আগুন সন্ত্রাস বিএনপির! হরতালের জেরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বন্ধ সমর্থকরা যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি ট্রেনেও নাশকতার লক্ষ্যে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৪ মিনিটে ট্রেনে আগুন লাগার খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টার পর তিনটি বগির আগুন নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। তার পরই একটি বগি থেকে মা ও মেয়ে-সহ চারজনের দেহ উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা।
আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে গত মাস দেড়েক ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। তাদের দোসর ইসলামপন্থী দল জামাত। এখনও পর্যন্ত অন্তত ৩৭৭টি বাসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই কাজ করার জন্য হামলাকারীদের দেওয়া হত ৫ হাজার টাকা! গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ডের পরদিন থেকে গোটা দেশে অবরোধ কর্মসূচির ডাক দেয় বিএনপি-জামাত-সহ সমমনা ‘মৌলবাদী’ দলগুলো। ব্যাপক জীবনহানী ঘটাতে উপড়ে ফেলা হয় রেললাইনও। আগুন লাগানোর কাজের হোতা ঢাকা মহানগর ছাত্রদল নেতা আমির হোসেন রকিকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য উঠে আসে। বাসে আগুন লাগানোর সময় হাতেনাতে আটক করা হয় আলি আমিন নামে এক ব্যক্তিকে। এর পর মিজানুর রহমান ও সাকিব নামেও ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রহস্যজনকভাবে আগুন লাগছে বড় বড় মার্কেটগুলোতে। গত তিন মাসে ৬৯টি নাশকতার মামলায় বিএনপির ১ হাজার ২৬ জন নেতাকর্মীর শাস্তি হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
[আরও পড়ুন: আসন রফায় সিলমোহর! ‘ক্ষুব্ধ’ জাতীয় পার্টির জন্য ২৬ আসন ছাড়ল আওয়ামি লিগ]
এছাড়াও টাঙ্গাইল ও জামালপুরে তিনটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঢাকা মহানগরে একটি, ময়মনসিংহে দুটি, গাজীপুর, নেত্রকোনা, নওগাঁ, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, পাবনা ও দিনাজপুর, নোয়াখালী, গাজীপুরে রেল লাইন উপড়ে ফেলা, ফিশপ্লেট খোলা-সহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। পাবনায় কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী ট্রেনে পেট্রল ও ডিজেল ভর্তি বোতল ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পরে দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিভিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে রেললাইনের উপর ইস্পাত ফেলে নাশকতার চেষ্টা করা হয়। দেশের বিভিন্নস্থানে রেলে নাশকতার বিষয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলন করার কথা রয়েছে রেলমন্ত্রীর।