সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সকালে জানা গিয়েছিল দেওঘরে রোপওয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত (Deoghar Ropeway Accident) পর্যটকদের অধিকাংশকেই উদ্ধার করা গেলেও তিনটি কেবল কারে ৬ জন আটকে রয়েছেন। ওই পর্যটকরা অসুস্থ হয়ে পড়েন বলেও জানা গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত কেবল কারে আটকে থাকা সমস্ত পর্যটককেই উদ্ধার করল সেনা ও অন্য উদ্ধারকারী দল। যদিও উদ্ধারের সময় আরও এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। ফলে দেওঘর রোপওয়ে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪। এদিকে ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren)। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের ঝাড়খণ্ড হাই কোর্টে।
রবিবার বিকেলে রোপওয়ে চেপে দেওঘরের ত্রিকূট পাহাড় (Trikut Hill) দর্শনই কাল হয়েছিল পর্যটকদের। ওই দিন দুপুরের পর আচমকা দু’টি রোপওয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতেই মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যায়। রোপওয়ে ছিঁড়ে মৃত্যু হয় ২ জন পর্যটকের। পরে উদ্ধার কাজের সময় হেলিকপ্টার থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে আরও এক পর্যটকের। উদ্ধারের কাজের সময় দু’জন পর্যটক হেলকপ্টার থেকে পড়ে যান। তাতেই মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। ফলে সব মিলিয়ে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ৪ জনের।
[আরও পড়ুন: অন্ধ্রপ্রদেশে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ট্রেনের ধাক্কায় মৃত কমপক্ষে ৬, আহত বেশ কয়েকজন]
সোমবার সকালে জানা গিয়েছিল, অন্তত ৪৫ জন পর্যটক বিপজ্জনকভাবে আটকে রয়েছেন ওই রোপওয়েতে। এদিকে খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। শুরু হয় উদ্ধার কাজ। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে নামানো হয় সেনা। সঙ্গে ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। আজ জানা সকালে গিয়েছে, লাগাতার ৪০ ঘণ্টা উদ্ধার কাজের পর ৩৯ জন পর্যটককে উদ্ধার করা গিয়েছে। তখনও তিনটি কেবল কারে ৬ জন আটকে রয়েছেন। স্বভাবতই একটানা দু’দিন কেবল কারে আটকে থাকায় তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ওই ৬ জনকেও উদ্ধার করা হয়।
[আরও পড়ুন: আরও নিম্নমুখী দেশের কোভিড গ্রাফ, তবে মৃত্যুহার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে]
যদিও প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ড্রোনের মাধ্যমে রোপওয়েতে আটকে থাকা পর্যটকদের জল ও খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়। তবে গতকাল সূর্যাস্তের পর ওই বিপজ্জনক পাহাড়ে উদ্ধার কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হন তাঁরা। এদিন সকাল থেকে ফের তা শুরু হয়। দেওঘরের ডেপুটি কমিশনার মঞ্জুনাথ ভজনত্রি জানিয়েছিলেন, সেনা, ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) সম্মিলিত উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। বায়ুসেনার দু’টি হেলকপ্টারকে কাজে লাগানো হয়।
উল্লেখ্য, গতকালই ত্রিকূট পাহাড়ের মর্মান্তিক রোপওয়ে দুর্ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। পাশাপাশি টুইট করে মৃত পর্যটকদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। এদিকে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট দেওঘর রোপওয়ে ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে। দুর্ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ২৬ এপ্রিল শুনানি হবে।