সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল পাকিস্তানের বালোচিস্তান সীমান্ত। ওই প্রদেশের সীমান্তবর্তী শহরে ইরানের সেনাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অনত ৪ জন। আহত ২। ইসলামাবাদের অভিযোগ, কোনওরকম উস্কানি বা কারণ ছাড়াই একটি গাড়ি লক্ষ্য নির্বিচারে গুলি চালায় ইরানি সেনা। তাতেই মৃত্যু হয় নিরীহ বাসিন্দাদের। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি পাকিস্তান। ফলে ফের বড়সড় সংঘাতে জড়াতে পারে দুদেশ।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে মাশকিল বাচা রাই শহরে। সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলটি বালোচিস্তানের অশান্ত এলাকগুলোর মধ্যে অন্যতম। এবং পাক-ইরান দুদেশের নিরাপত্তার দিক থেকেও যথেষ্ট সংবেদনশীল। জানা গিয়েছে, এদিন ওই শহরে একটি গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় ইরানি ফৌজ। তাতে মৃত্যু হয় ৪ জন স্থানীয়। গুরুতর জখম হন দুজন। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। তবে ঠিক কী কারণে গুলি চালানো হয়েছে তা নিয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি ইরানের তরফে। গুলিবর্ষণের ঘটনার পর ইসলামিক দেশটির সেনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পাক সেনা। ফলে ফের দুদেশের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। যার উপর এখন নজর রয়েছে কূটনৈতিক মহলের।
[আরও পড়ুন: বিমানের ইঞ্জিনে পড়ে ভয়ংকর মৃত্যু, ব্লেডে ছিন্নভিন্ন ব্যক্তির দেহ]
বলে রাখা ভালো, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানের জেহাদি ডেরায় মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান (Iran)। পাকিস্তানের সবথেকে বড় প্রদেশ বালোচিস্তানে জেহাদি সংগঠন জইশ আল আদলের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ইরানের এলিট রেভোলিউশনারি গার্ড। এই হামলার পিছনে তেহরানের যুক্তি ছিল নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনে অভিযান চালানো হয়েছে। তার দুদিনের মধ্যেই হামলার পালটা দেয় পাক ফৌজ। একই যুক্তি দেখিয়ে ইরানে বালোচ বিদ্রোহীদের উপর হামলা চালায় ইসলামাবাদ। দুই দেশের ওই সংঘর্ষে দুই শিশু-সহ ১১ জনের মৃত্যু হয়। এর পরই একে ওপরের রাষ্ট্রদূতদের তলব করে দুই দেশ।
দুই মুসলিম প্রধান দেশের মধ্যে হওয়া এই সংঘর্ষ নিয়ে নড়েচড়ে বসে আন্তর্জাতিক মহল। উদ্বেগ প্রকাশ করে ভারত, চিন, রাশিয়া ও আমেরিকা-সহ বহু দেশ। রাষ্ট্রসংঘ ও মার্কিন প্রশাসন দুই দেশকেই সংযত হয়ে উত্তেজনা কমানোর বার্তা দিয়েছিল। অন্যদিকে, দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে রাজি হয়েছিল চিন। তার পর বৈঠকে বসেন ইরান ও পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রীরা। ভৌগলিক অখণ্ডতা তথা সার্বভৌমত্বের প্রতি পারস্পরিক সম্মান যে জরুরি তা জানিয়ে বৈঠকের পর দুই দেশের তরফে যৌথবিবৃতিও দেওয়া হয়।