সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারণ করোনার প্রকোপে দেশে অনাথ হয়েছে অসংখ্য শিশু। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে সেই সব অনাথ শিশুদের জন্য আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিঃসন্দেহে প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছিল দলমত নির্বিশেষে। তবে ওইটুকুই, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে প্রতিশ্রুতি মতো আর্থিক সহায়তা দিতে খুব একটা আগ্রহ নেই মোদি সরকারের। সাম্প্রতিক তথ্য পরিসংখ্যান সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
করোনায় অসহায় অনাথ শিশুদের উদ্দেশে মোদি সরকারের তরফে চালু করা হয়েছিল 'পিএম কেয়ার্স ফর চিলড্রেন স্কিম' (PMCCS)। তবে বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এই প্রকল্পের আবেদনকারীর মধ্যে ৫১ শতাংশ আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কেন্দ্র। কেন সেই আবেদন খারিজ করা হয়েছে তার কোনও উপযুক্ত কারণও দেখানো হয়নি। হিন্দি সংবাদ মাধ্যম 'অমর উজালা' প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারের এক বরিষ্ঠ আধিকারিক এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৩৩ রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ৬১৩ জেলা থেকে মোট ৯ হাজার ৩৩১টি আবেদন জমা পড়েছিল এই প্রকল্পের জন্য। তবে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, ৯ হাজার ৩৩১টি আবেদনের মধ্যে ৪,৫৩২ টি আবেদন গ্রহণ করেছে সরকার। বাতিল করা হয়েছে ৪,৭৮১টি আবেদন। পাশাপাশি ১৮টি আবেদনের এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
[আরও পড়ুন: এক রাজ্যের জাতি শংসাপত্র অন্য রাজ্যে বৈধ নয়, নির্দেশ হাই কোর্টের]
এছাড়া নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, যে সব আবেদন জমা পড়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে মহারাষ্ট্র থেকে (১৫১১)। এছাড়া উত্তরপ্রদেশ (১০০৭), রাজস্থান (১৫৫৩)। সর্বাধিক এই তিন রাজ্যের আবেদনের মধ্যে মহারাষ্ট্রে ৮৫৫টি আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থান থেকে যথাক্রমে ৪৬৭ ও ২১০টি আবেদন গ্রহণ করা হয়। তবে কেন এত আবেদন বাতিল করা হল তার কোনও স্পষ্ট উত্তর সরকারের তরফে দেওয়া হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘মিথ্যে বয়ান দিতে বাধ্য করায় পুলিশ’, গৌরী লঙ্কেশ হত্যাকাণ্ডে বিস্ফোরক প্রধান সাক্ষী]
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৯ মে 'পিএম কেয়ার্স ফর চিলড্রেন স্কিম' প্রকল্প চালুর ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানানো হয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই সব শিশুকে সরকার সাহায্য করবে যারা করোনার জেরে তার বাবা-মা কিংবা আইনি অভিভাবককে হারিয়েছেন। জানানো হয়, এই সব অনাথ শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যের পাশাপাশি পড়াশুনার সমস্ত খরচ বহন করবে সরকার। এবং যতদিন না তারা স্বাবলম্বী হচ্ছে, ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত তাদের আর্থিক সহায়তা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। নিশ্চিতভাবে সরকারের এই মানবিক পদক্ষেপ প্রশংসিত হয় গোটা দেশে। যদিও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এই প্রকল্পে আবেদনকারীর অর্ধেকের বেশি আবেদন বাতিল করেছে সরকার। এবং এর জন্য কোনও কারণও দেখানো হয়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রের এই প্রকল্প।