শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: বন্যার (Flood) জলই মৃত্যুফাঁদ। সেই জল প্রাণ কাড়ল ৬ বছরের এক শিশুর। শুক্রবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের (Ghatal)এই ঘটনায় বিপদের মাঝেই শোকে আকুল পরিবার। কীভাবে জলমগ্ন বাড়ি থেকে নিরাপদে বের হবেন, সেই চিন্তা এখন উধাও তাঁদের। ৬ বছরের ছেলের আচমকা মৃত্যুর ধাক্কাই সামলে উঠতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা। ঘাটাল পুরএলাকার ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
টানা বৃষ্টি, ডিভিসি (DVC) থেকে ছাড়া জল, মুকুটমণিপুরের জলাধার থেকে উপচে আসা কংসাবতীর জল – ত্রিফলার ধাক্কায় এই মুহূর্তে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, চন্দ্রকোণা-সহ একাধিক মহকুমায় পুরোপুরি বন্যা পরিস্থিতি। ঘাটাল ব্লকের অধিকাংশ কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বহু পাকা বাড়ির একতলায় জমেছে জল। সময় যত যাচ্ছে, ততই জলের বিপদ বাড়ছে, অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির। জলের তলায় ডুবে যাওয়া বাড়িগুলি থেকে কীভাবে নিরাপদ জায়গায় সরবেন, সেটাই এখন মূল ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষজনের।
[আরও পড়ুন: লাগাতার দলবিরোধী মন্তব্য, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে শোকজ বিজেপির]
এমনই এক সংকটের মুহূর্তে ঘাটাল ৬ নং ওয়ার্ড এলাকার গম্ভীরনগরের চানক পরিবারে নেমে এল মৃত্যুর ফাঁড়া। সকালে উঠে বাড়ির ৬ বছরের ছেলে সৌম্যজিৎ সামান্য জলেই উঠোনে খেলাধুলা করছিল। ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি, উঠোনের ওই জলের স্তর কখন বাড়তে শুরু করেছে। তারপর সেই জলই তাকে ডুবিয়ে, ভাসিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে বাড়ি থেকে দূরে। সকাল প্রায় সাড়ে ৮টা নাগাদ এই ঘটনার বেশ খানিকক্ষণ পর পরিবারের সকলের খেয়াল হয়, ছেলেটি গেল কোথায়?
[আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিতে ভাঙল অজয় নদের বাঁধ, হু হু গতিতে জল ঢুকছে বীরভূম, মঙ্গলকোটের বহু গ্রামে]
খোঁজখবর নিয়ে দেখা যায়, উঠোন ছাপিয়ে ওঠা জলের মাঝে বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটি গাছের তলায় আটকে গিয়েছে ছেলেটি। কাছে গিয়ে দেখা যায়, ততক্ষণে প্রাণবায়ু নিভে গিয়েছে তার। ঘাটালের অন্তত ১২ টি ব্লকই এমন জলবন্দি। চন্দ্রকোণায় শিলাবতীর জলে প্লাবিত রাজ্য সড়ক।
পাশাপাশি, ধীরে ধীরে ডিভিসির ছাড়া জল ঢুকে হাওড়ার (Howrah) আমতা, উদয়নারায়ণপুরও প্লাবিত। শিবানীপুরে পাঁচটি জায়গায় ইতিমধ্যেই বাঁধ ভেঙেছে। শুক্রবার সকালেই উদয়নারায়ণপুরে যান হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য হাওড়ার গ্রামীণ পুলিশের সুপার সৌম্য রায়-সহ প্রশাসনের কর্তারা তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বিডিও সুব্রত সিট ও উদয়নারায়ণপুর এর বিধায়ক সমীর পাঁজা জানিয়েছেন, সেনা পৌঁছে গিয়েছে। তারা শীঘ্রই অপারেশনে নামবে।