নিরুফা খাতুন: পুজোর (Durga Puja)সময় দূষণমাত্রা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। বিশেষ করে জল সবথেকে বেশি দূষণ (Pollution) ছড়ায়। জল দূষণ রুখতে সীসাবিহীন রং ব্যবহারে জন্য শিল্পী ও পুজো উদ্যোক্তাদের সচেতন করে আসছেন পরিবেশবিদরা। কিন্তু তা ব্যবহার করতে গেলে খরচ বেড়ে যাবে, এই ভয়ে প্রথমদিকে শিল্পী এবং পুজো আয়োজকরা পরিবেশবান্ধব প্রতিমা গড়ার আবেদনে সাড়া দিচ্ছিলেন না। তবে ধীরে ধীরে দূষণমুক্ত পুজোয় এগিয়ে আসছেন মৃৎশিল্পী এবং আয়োজকরা। পরিবেশবান্ধব প্রতিমার জন্য এখন বাড়তি টাকা নিয়েও দরাদরি করছেন না।
কুমোরটুলি মৃৎশিল্প ও সংস্কৃতির যুগ্ম সম্পাদক রঞ্জিত সরকার বলেন, সীসাযুক্ত (Lead) রঙের প্রতিমার যা দাম, পরিবেশবান্ধব (Environment friendly) রং ব্যবহার করলে প্রায় হাজার টাকা বেশি পড়ে যায়। প্রতিমার উচ্চতা অনুযায়ী খরচ বেড়ে যায়। তবে পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এ বছর মৃৎশিল্পীরা ভেষজ রং ব্যবহারের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। একটা সময় ছিল কুমোটুলিতে শুধুমাত্র সীসাযুক্ত রং ব্যবহার হত। এখন অনেক শিল্পী পরিবেশবান্ধব রং ব্যবহার করছেন। পরিবেশবান্ধব রঙে প্রতিমার খরচ একটু বেশি হয়।
[আরও পডুন: Durga Puja 2021: এবার ‘দুয়ারে কেনাকাটা’, ভিড় এড়িয়ে চটজলদি সেরে ফেলুন পুজোর শপিং, কোথায় মিলছে এমন সুযোগ?]
তবে গত কয়েক বছর ধরে পুজো আয়োজকরা রং (Colour)নিয়ে কোনও দরাদরি করছেন না। মৃৎশিল্পী বাসুদেব পাল বলেন, ”আগে ক্রেতা এলে পরিবেশবান্ধব রং দেব কিনা, জিজ্ঞেস করতে হত। প্রতিমার দাম একটু বেশি হবে শুনেই অধিকাংশ ক্রেতা পিছিয়ে যেতেন। কিন্তু এখন প্রতিমার খরচভারে আলাদা করে পরিবেশবান্ধব রঙের উল্লেখ করা হয় না। ক্রেতারাও এ নিয়ে কোনও বিরোধ করেন না।”
[আরও পডুন: WB By-Election: তথাগত রায়ের আশীর্বাদ নিলেন BJP প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা, প্রচার শুরু কালীঘাট থেকে]
কলকাতা শহরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বারোয়ারি পুজো হয়। পুজোর পরই প্রতিমা জলে বিসর্জন দেওয়া হয়। বিসর্জনের পর প্রতিমার গায়ে সীসাযুক্ত বিষাক্ত রঙে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদের ক্ষতি হয়। পরিবেশবিদ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, “এখন অনেক বড় পুজো কমিটি দেখছি পরিবেশবান্ধব রং ব্যবহার করছে। অনেক সংস্থাও পরিবেশবান্ধব রং স্পনসর করে থাকে।” তবে পরিবেশবিদদের কথায়, শহরে দুর্গাপুজো শুধু হয় না, গণেশ, বিশ্বকর্মা, কালী, সরস্বতী, লক্ষ্মী পুজো হয়। সব প্রতিমা কুমোরটুলি থেকেও আসে না। অধিকাংশ শিল্পী প্রতিমার গায়ে এখনও ক্ষতিকারক রং ব্যবহার করছেন।