সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যানজটের জন্য কম কথা শুনতে হয় না কলকাতাকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্যারিসের (Paris) রাজপথ যেভাবে অবরুদ্ধ হয়েছিল, তা দেখে বিস্মিত গোটা বিশ্ব। ৭০০ কিলোমিটার বিস্তৃত এই জ্যাম যে নজিরবিহীন তা মানছেন সকলেই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা জুড়ে চলতে থাকা জ্যামে কার্যত জট পাকিয়ে যায় যানবাহন চলাচল। এমন অদ্ভুত পরিস্থিতির নেপথ্যে অতর্কিতে ডাকা লকডাউন (Lockdown)।
আসলে শুক্রবার থেকেই গোটা ফ্রান্স জুড়ে লকডাউন ঘোষিত হয়। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলির মতো ফ্রান্সেও (France) শুক্রবার মধ্যরাত থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। তার আগের দিন ব্যস্ততা বাড়ার সম্ভাবনা ছিলই। কিন্তু পরিস্থিতি চলে যায় হাতের বাইরে। অনেকেই বেরিয়েছিলেন খাবার মজুত করতে। তাই নিত্যসামগ্রীর দোকানে ভিড় ছিল প্রবল। আবার অনেকেই যাচ্ছিলেন বন্ধু-স্বজনের বাড়িতে ছুটি কাটাতে। একসঙ্গে এত মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে পড়ায় তালগোল পাকিয়ে যায় যান চলাচল ব্যবস্থা। ফলে সৃষ্টি হয় নজিরবিহীন দৃশ্যের। মাইলের পর মাইল কার্যত থমকে যায় সব গাড়ি। সামান্য দূরত্ব এগোতেও কেটে যেতে থাকে দীর্ঘ সময়। তবে গোটা বিশ্বের কাছে এটা বিস্ময়কর হলেও ফরাসিদের কাছে এমন ব্যাপার নতুন নয়। এর আগে গত ডিসেম্বরে অকস্মাৎ যান ধর্মঘটের ফলেও দেখা গিয়েছিল এক দীর্ঘ যানজট। সেটা ছিল ৬২৯ কিমি দীর্ঘ। এবারের যানজট অবশ্য সেই রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: আজীবন চিনের প্রেসিডেন্ট থাকবেন জিনপিং? দলীয় প্লেনাম শেষে শুরু জল্পনা]
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে ফ্রান্সে। বৃহস্পতিবারও গোটা ফ্রান্সে ৪৭,৬৩৭ জন করোনা আক্রান্ত হন। মৃত্যু হয় ২৫০ জনের। উপায়ান্তর না দেখে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ ফের লকডাউনের নির্দেশ দেন। আগামী ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত লকডাউন থাকবে। আপাতত লক্ষ্য দৈনিক সংক্রমণ ৫ হাজারের নীচে নিয়ে যাওয়া। তবে লকডাউনে ছোটখাটো ছাড় দেওয়া হয়েছে। খুব প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বেরনো যাবে না। কিন্তু বাড়ি থেকে ১ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত প্রাতঃভ্রমণ করার অনুমতি রয়েছে। যাওয়া যাবে অফিসে। খোলা থাকবে অত্যাবশকীয় পণ্যের দোকানও। বন্ধ থাকবে রেস্তোঁরা ও ক্যাফে। তবে তারা হোম ডেলিভারি করতে পারবে।