সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতিবাদ, বিক্ষোভে শামিল বড়রা। তাদের সামলাতে গিয়ে পুলিশের এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ। এরই মাঝে লাঠির ঘা থেকে বাঁচতে দৌড়ে পালাতে গিয়ে প্রাণ গেল এক খুদের। বারাণসীতে ৮ বছরের মহম্মদ সাগিরের মৃত্যু আন্দোলনকে দমনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আরও প্রশ্ন তুলে দিল। পাশাপাশি, এ নিয়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে নেমে উত্তরপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৮।
ঘটনা শনিবারের। বারাণসীর বাজারডিহা এলাকার ছোট্ট গলি ধারারা স্ট্রিটে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল মহম্মদ সাগির। এমন সময় ওই রাস্তা ধরেই একদল লোক হইহই করে ছুটে আসে। তাঁরা CAA বিরোধী আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। পুলিশের তাড়া খেয়ে ধারারা স্ট্রিটের গলিতে আশ্রয় নিতে চাইছিলেন। তাই তাঁদের পিছনে লাঠি হাতে দৌড়চ্ছিল একদল পুলিশও। খেলতে খেলতে এই দৃশ্যে তাল কেটে যায় সাগিরদের। তারাও প্রাণভয়ে ছুটে পালাতে যায়। পদপিষ্ট হয়ে রাস্তায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে যায় সাগির এবং তার আরেক বন্ধু মহম্মদ তনভির। দ্রুত তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাগিরকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তনভির আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
[আরও পড়ুন: কীভাবে রুখবেন NRC? বিরোধীদের জোড়া উপায় বাতলে দিলেন প্রশান্ত কিশোর]
সাগিরের বাবা মহম্মদ উকিল জানিয়েছেন, শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ CAA’র প্রতিবাদে একটি শান্তিপূর্ণ জমায়েত হয়েছিল ওই এলাকায়। কিন্তু সেখানেই পুলিশ আচমকা লাঠিচার্জ করতে শুরু করে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় জ্বলছে উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গা। সময় যত গড়াচ্ছে, লখনউ, গোরক্ষপুর, কানপুর-সহ একাধিক শহরে ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভের আঁচ। বিক্ষোভ দমনে পুলিশের পালটা গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও গুলিচালনার ঘটনা বরাবরই অস্বীকার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। রাজ্যের পুলিশ প্রধান ওমপ্রকাশ সিং স্পষ্ট বলেছেন যে গুলি নয়, বিক্ষোভকারীদের হঠাতে তাঁরা টিয়ার গ্যাস, জলকামান ব্যবহার করছেন। গুলি চললে, তা ভিড়ের মধ্যে থেকে অজ্ঞাতপরিচয়রা চালিয়েছে। এই মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। কেন অশান্তিতে ইন্ধন যোগানো অজ্ঞাতপরিচয়দের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ? প্রশ্ন উঠছে।
এই পরিস্থিতিতে শান্তির বার্তা দিয়েছেন লখনউয়ের শিয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান কালবে জাওয়াদ। তাঁর কথায়, ”আমি সম্প্রদায়ের সকলের কাছে আবেদন করেছি যে যেখানে যেখানে হিংসা ছড়িয়ে পড়ছে, সেসব জায়গা এড়িয়ে চলুন। রাজনীতিবিদরা মানুষে মানুষে লড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এটা আমাদের বুঝতে হবে এবং এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।” অশান্তির জেরে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশের স্পর্শকাতর এলাকায় জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এখন ৮ বছরের সাগিরের মৃত্যু অনেক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। একটা আইন নিয়ে দেশব্যাপী শুরু হওয়া রাজনৈতিক প্রতিবাদের বলি এক শিশু।
[আরও পড়ুন: অভব্য আচরণ করেছেন বিমানকর্মীরা, মেজাজ হারালেন প্রজ্ঞা ঠাকুর]
The post শান্তিপূর্ণ জমায়েতে পুলিশের লাঠিচার্জ, পালানোর সময়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ গেল বালকের appeared first on Sangbad Pratidin.