সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এস এস রাজামৌলি পরিচালিত সিনেমা ‘বাহুবলী ২’-র ভিএফএক্স, সেট ডিজাইন, পরিচালনা, মেক আপ ও অভিনেতাদের পারফরম্যান্স নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু এই সবের মধ্যে বড় পর্দায় দেবসেনার স্বামী অমরেন্দ্র বাহুবলীর পুরুষালি আবেদন নিয়ে কয়েকটি কথা না বললেই নয়। ২১ শতকের মেয়েদের চোখেও এখন অমরেন্দ্র ‘পারফেক্ট হাজব্যান্ড মেটিরিয়াল’। সোশ্যাল মিডিয়া, মাইক্রো ব্লগিং সাইটে তাঁর চরিত্রের গুণগানের ছড়াছড়ি। এই প্রতিবেদনে দেখে নিন কেন অমরেন্দ্রর মতো স্বামী চাইছেন এই প্রজন্মের মেয়েরা।
১. ‘মাম্মাজ বয়’ হলেও স্ত্রীর সম্ভ্রমের প্রতি যত্নশীল: সেই দৃশ্যটার কথা মনে আছে নিশ্চয়, যেখানে অমরেন্দ্র বলছেন, “দেবসেনার গায়ে কেউ হাত দেওয়া মানে বাহুবলীর তলোয়ারের গায়ে হাত দেওয়া।” ওই দৃশ্যে সিনেমা হল-এ হাততালির বন্যা বয়ে যায়। কারণ, স্ত্রী ঠিক জেনে মা’র বিরোধিতা করতেও রাজি যে সন্তান, তাঁকে না ভালবেসে উপায় আছে? মেয়েরা তো এমনই স্বামী চান। মহিলাদের প্রতি কী দুর্দান্ত সম্ভ্রম দেখিয়েছেন বাহুবলী। ভরা সভায় সদর্পের সঙ্গে বলেছেন, মেয়েদের গায়ে কেউ হাত দিলে তাঁর আঙুল নয়, মুণ্ডু কেটে ফেলা উচিত।
২. যেমনটা দেখতে, তেমনই ব্যবহার: সুন্দর দেখতে বলেই যে ছেলেদের হামবড়া ভাব থাকতে হবে, এমনটা বিলকুল না পসন্দ মেয়েদের। বরং দেখতে সুন্দর, হ্যান্ডসাম অথচ ব্যবহারও ততটাই ভদ্র, এমন ছেলেকে কোন মেয়ে পছন্দ করবে না?
৩. অ্যাটিটিউড নয়, নম্রতাই পরিচয়: দেবসেনার সামনে বাহুবলী বলে দিতেই পারত যে সে মাহেশমতির হবু মহারাজ। দেখাতেই পারত রাজার মতো ‘অ্যাটিটিউড’। কিন্তু সেটা না করে নিজের নম্র, সহজ ও সরল ব্যবহারের মাধ্যমে পছন্দের মানুষটির মন জয় করতে চান অমরেন্দ্র। তাঁর এই ব্যবহারই মেয়েদের হৃদয়ে ঝড় তুলেছে।
৪. স্ত্রী ও তাঁর পরিবারকেও সমান সম্মান: কাটাপ্পা যখন বাহুবলীর আসল পরিচয় দেবসেনার পরিবারের সামনে উন্মুক্ত করেন, তখন সসম্ভ্রমে বাহুবলীর সামনে ঝুঁকতে যান দেবসেনার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বাহুবলী তাঁদের বলেন, “সম্বন্ধীরা একে অপরের সামনে ঝুঁকবেন কেন, তাঁরা গলা মেলাবেন।” ঠিক এটাই আজকালকার মেয়েরা চায়। ছেলেদের পরিবারের পাশাপাশি, তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও যেন পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া হয়, সেটা চায় এখনকার সব মেয়ে।
৫. সব দরকারে পাশে থাকার অঙ্গীকার: দেবসেনা যখন নৌকায় উঠতে যাচ্ছিলেন, তখন রাজকীয় মেজাজ ভুলে বাহুবলী যেভাবে নিজের কাঁধ এগিয়ে দেন, দেখেই বোঝা যায় যে কোনও পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর স্ত্রীর পাশে থাকবেন। এই কমিটমেন্টটাই চায় মেয়েরা।
৬. স্ত্রীর জন্য ত্যাগ স্বীকার: রাজমাতা বাহুবলীকে মাহেশমতির রাজা হিসাবে নিযুক্ত করেন। কিন্তু তার জন্য দেবসেনাকে ত্যাগ করতে হবে বাহুবলীকে। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রীর সম্মান রক্ষার্থে হেলায় রাজ পরিবারের যাবতীয় সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দেন অমরেন্দ্র। তাঁর এই ‘ডেডিকেশন’, ‘স্যাক্রিফাইস’ তাঁকে মেয়েদের চোখে আদর্শ পুরুষ করে তুলেছে।
৭. মা ও স্ত্রীর ঝগড়ায় কোনও হস্তক্ষেপ নয়: সিনেমার একটি দৃশ্যে বাহুবলীর কাছ থেকে সেনাপ্রধানের পদ কেড়ে অযোগ্য কাউকে দিয়ে দেওয়া নিয়ে দেবসেনা ও শিবগামীকে একে অপরের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায়। স্ত্রীর ও মা’র মধ্যে সেই ঝগড়ায় কিন্তু বাহুবলী হস্তক্ষেপ করেনি। এটাই পুরুষোচিত কাজ বলে মনে করেন এই প্রজন্মের মহিলারা।
৮. স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ পুরুষবন্ধুর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক: সিনেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ অথচ মজাদার চরিত্র ‘কুমার’ দেবসেনাকে যথেষ্ট পছন্দ করে। এটা জানার পরেও বাহুবলী তাঁর সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন। এমনকী, বিয়ের পরও। আজকাল সাধারণ মানুষ স্ত্রী কোনও পুরুষবন্ধুর সঙ্গে কথাটুকু বললেও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। এখানেই ‘বাহুবলী ২’ শিক্ষা দিয়ে যায়, সত্যিকারের ভালবাসা যেন কাউকে ‘ইনসিকিওর’ না করে।
৯. স্ত্রীর খামতিতে না হেসে তাঁকে প্রশিক্ষিত করে তোলা: দেবসেনা জানতেন না কী করে তিনটি তিরের সাহায্যে শত্রুদের বিনাশ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত বাহুবলী তাঁকে হাতেকলমে শিখিয়ে দেন। এখনকার দিনের মেয়েরাও চায়, স্বামী যেন তাঁকে শিক্ষা দেন, সমর্থন জানান। তা সে পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন।
আর সবশেষে এ কথা বলতেই হয় যে স্ক্রিনে বাহুবলীকে দেখতেও দুর্দান্ত লেগেছে। ২১ শতকের মেয়েরা চান, তাঁদের জীবনসঙ্গী যেন দেখতে সুন্দর, বুদ্ধিমান ও শিক্ষিত হন। একদিকে শত্রুর বিনাশ অন্যদিকে স্ত্রীকে ভালবাসায় ভরিয়ে দেওয়া- দুটোই যে পুরুষ নিপুণভাবে করতে পারবেন, তাঁর পক্ষে সব প্রজন্মের মেয়েদের মন জিতে নেওয়া সম্ভব।
প্রতিবেদনটি ভাল লাগলে LIKE/SHARE করতে ভুলবেন না।
The post এই প্রজন্মের মেয়েদের চোখে কেন অমরেন্দ্র বাহুবলীই আদর্শ স্বামী, পড়ুন ৯টি কারণ! appeared first on Sangbad Pratidin.