রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: এ যেন উলটপুরাণ! ৩৪ বছর শাসনকাল অবসানের মাত্র ১০ বছরের মধ্যে বিধানসভা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বামেরা। সংগঠনেরও হাল তথৈবচ। উলটোদিকে তৃণমূলের পালে এখন দক্ষিণা বাতাস। তরতরিয়ে এগিয়ে চলছে তাদের জয়রথ। প্রধান বিরোধী হিসেবে লড়াই দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপিও। এর মাঝেই রাজ্য়ের শাসকদল তৃণমূল ও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি থেকে বামশিবিরে যোগ দিল ৯২০ পরিবার। এমন ঘটনা ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর-২ ব্লকের কালিন্দীতে।
বামেদের সমাবেশে তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে ৯২০টি পরিবার সুজন চক্রবর্তীর হাত ধরে সিপিএমে যোগদান করে। যোগদান উপলক্ষে সোমবার কালিন্দীতে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। সমাবেশ মঞ্চ থেকেই নবাগতদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেয় সিপিএম নেতৃত্ব। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী, জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি,যুব নেতা বিশিষ্ট আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়,ইব্রাহিম আলি,আশিস প্রামাণিক, ফারুক আলি প্রমুখ।
[আরও পড়ুন: সুকান্ত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন আগেই, মঙ্গলবার অভিষেকের পাড়ায় যাচ্ছে বিজেপি!]
তৃণমূল থেকে উল্লেখযোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে এদিন সিপিএমের যোগদান করেন শেখ ওয়াহের মহম্মদ, ফারুক আলি, শঙ্কর জানা, যুব তৃণমূল নেতা ইরফান হোসেন,হারাধন মণ্ডল, শেখ সাহাবুদ্দিন প্রমুখ। তৃণমূলত্যাগী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “তৃণমূল একটি দুর্নীতিগ্রস্ত সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দল। দিনে-দিনে রাজ্যের গণতন্ত্রকে শেষ করে দিচ্ছে। রাজ্যজুড়ে শিক্ষক নিয়োগের নামে ব্যাপক দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে জেলাজুড়ে তোলাবাজি করা হচ্ছে।” একের পর এক দুর্নীতির ঘটনার জেরে তাঁরা দল পরিবর্তন করতে বাধ্য হলেন বলে জানান দলত্যাগীরা।
[আরও পড়ুন: অপারেশন থিয়েটারেই চিকিৎসকদের হাতাহাতি! বেনজির বিশৃঙ্খলা আর জি কর হাসপাতালে]
বিশিষ্ট আইনজীবী তথা রাজ্যের যুব নেতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখনও সময় আছে শুধরে যান, শুধরে গিয়ে রামনগরের কালিন্দীর মত সারা রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে লাল ঝান্ডার তলায় আশ্রয় নিতে শুরু করুন। তা না হলে এমন একদিন আসবে যে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের পোস্টার ঝুলিয়ে বাঁচার জন্য বলতে হবে আমি তৃণমূল করি না।” সুজন চক্রবর্তী বলেন,”এ রাজ্যের সৈকত কেন্দ্র দিঘা-শংকরপুর-মন্দারমণি-তাজপুর জুড়ে তৃণমূল অধুনা বিজেপি তোলাবাজি চালাচ্ছে। তৃণমূল নেতাদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে ইডি, সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থা না পারলে আগামিদিনে রামনগর-সহ কাঁথির মানুষ তৃণমূল নেতাদের বেআইনি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবে।”