ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ক্যানসারের যন্ত্রনাকে তুচ্ছ করে মানুষের সেবায় ব্রতী হলেন বোলপুরের এক সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা। দিনে গড়ে একশোটি করে মাস্ক বানিয়ে তুলে দিচ্ছেন শান্তিনিকেতন পুলিশের হাতে। তাঁর এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানালেন স্থানীয়রা।
শান্তিনিকেতনের (Shantiniketan) পূর্বপল্লীর বাসিন্দা সন্ধ্যা রায়। বয়স সত্তোরের কোটা পেরোলেও অদম্য ইচ্ছাশক্তি হার মানায় যে কোনও তরুণকে। তাইতো নিজের শরীরের ক্যানসারের যন্ত্রণাকে তুচ্ছ করতে পারেন অবলীলায়। করোনা আবহেও ভয় না পেয়ে ব্রতী হয়েছেন অন্যের জন্য। মাস্ক বানিয়ে তা বিনামূল্যে তুলে দিচ্ছেন পুলিশের হাতে। জানা যায়, সন্ধ্যা রায়ের দুই মেয়ে। এক মেয়ে কর্মসূত্রে থাকেন কলকাতায়। অন্যজন বিয়ের পর দক্ষিণ ভারতে। শান্তিনিকেতনের বাড়িতে একা থেকে সন্ধ্যা দেবী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ক্যানসারের সঙ্গে। লকডাউনের আবহে আমজনতার মত তিনিও পড়েছেন বিপাকে। একদিকে মেয়েরা তাঁর কাছে আসতে পারছেন না, অন্যদিকে লকডাউনের জেরে বৃদ্ধা ক্যানসারেরও ওষুধ পাচ্ছেন না। লকডাউনের ফলে কলকাতা থেকে বন্ধ হয়েছে ওষুধ আসা। তাই বাজার থেকে প্রয়োজনেরও কম ওষুধ পেয়ে কোনওক্রমে ক্যানসারের যন্ত্রণাকে কম করার চেষ্টা করছেন তিনি। তবে এতকিছুর মাঝেও হার মানেনি। অন্যের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে সেলাই মেশিনে গরিব সাধারন মানুষদের জন্য বানিয়ে ফেলছেন মাস্ক। আর তা তুলে দিচ্ছেন শান্তিনিকেতন থানার পুলিশের হাতে।
[আরও পড়ুন:লকডাউনে বাড়ছে বাস ভাড়া! আমজনতার দুশ্চিন্তা দূর করে সিদ্ধান্ত জানালেন পরিবহণ মন্ত্রী]
এই বিষয়ে সন্ধ্যা রায়কে জিজ্ঞাসা করতে তিনি বলেন, “লকডাউনের জন্য আমি প্রয়োজনীয় সব ওষুধ পাচ্ছি না। কিন্তু পুলিশ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সামান্য সুস্থ হয়ে গরিব মানুষদের জন্য আমি মাস্ক বানিয়ে পুলিশকে দিচ্ছি। এই কাজ করে শারীরিক যন্ত্রনা হয়তো কমছে না, কিন্তু আমি মানসিক শান্তি পাচ্ছি।” আসলে জীবনে বেঁচে থাকার আক্ষরিক অর্থটা হয়তো বুঝতে পেরেছেন এই বৃদ্ধা। সেই যে ছোটবেলায় পাঠ্যবইতে লেখা থাকে, সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
[আরও পড়ুন:হেড এক্সামিনারের নির্দেশে লকডাউনেই চলছে মাধ্যমিকের খাতা জমা! ক্ষুব্ধ দূরের শিক্ষকরা]
The post ক্যানসারের যন্ত্রণাকে অগ্রাহ্য! মাস্ক বানাচ্ছেন বোলপুরের সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা appeared first on Sangbad Pratidin.