শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: মামাবাড়ির আদর খেয়ে বাড়ি ফিরছিল খুদে। বাবার টোটোয় চড়ে মায়ের কোলে বসে আশপাশ দেখতে দেখতে বাড়ি ফিরছিল। ঠিক সেই সময় বিপত্তি। বেহাল রাস্তায় টোটো প্রায় উলটে যাচ্ছিল। তবে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে সন্তান। টোটোচালক বাবা এবং মায়ের চোখের সামনেই প্রাণ গেল একরত্তির। উত্তর দিনাজপুরের রামপুরের ঘটনায় কান্নার রোল।
মহিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মনীয়ার বাসিন্দা আব্দুল রহমত পেশায় টোটোচালক। তিন সন্তানের বাবা। দুই কন্যাসন্তানের পর বছর দুয়েক আগে কোল আলো করে আসে মহম্মদ তামিন। মাত্র কয়েকদিন আগে ইটাহারে মামাবাড়ি গিয়েছিল। বুধবার টোটো নিয়ে স্ত্রী ও ছেলে লক্ষ্মনীয়ায় নিজের বাড়িতে আনতে যান। মায়ের কোলে বসে ফিরছিল সে। রামপুরের কাছে রাস্তায় বিরাট গর্ত। বারবার রাস্তা সারাইয়ের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে সেকথা কানে নেয়নি কেউই।
[আরও পড়ুন: অতিবৃষ্টিতে বানভাসি একাধিক জেলা, মোকাবিলায় একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি মুখ্যমন্ত্রীর]
বিরাট গর্তে টোটো দুর্ঘটনা ঘটছিল। কিন্তু কোনওক্রমে টোটো ওলটানো সামাল দেন চালক। তবে তার যে বড় বিপদ যে ওঁত পেতে বসে আছে, তা মুহূর্তের জন্য ভাবতে পারেননি আব্দুল রহমত। চোখের নিমেষে কোল থেকে ছিটকে পিচরাস্তায় পড়ে ছোট্ট সন্তান। রক্তে ভেসে যায় গোটা শরীর। তাকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসক শিশুকে মৃত বলে জানান। চোখের সামনে সন্তানের মৃত্যু মানতে পারছেন না বাবা-মা কেউই। চোখের জলে ভাসছেন তাঁরা। কথা বলার অবস্থায় নেই সদ্য সন্তানহারা মা। “কেন যে ওকে আনতে গেলাম”, চোখের জল মুছতে মুছতে একই কথা বলে চলেছেন খুদের বাবা।