শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: গত কয়েকদিনে বারবার সে দেখা দিচ্ছিল বলেই দাবি করছিলেন ডুয়ার্সের উত্তর শালবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা। কখনো দুরামারি, নাথুয়া কখনও আবার চানাডিবা এলাকায় তার উপস্থিতির খবর বাড়াচ্ছিল আতঙ্ক। কিন্তু হাজার খোঁজাখুঁজিতেও দেখা মিলছিল না তার। অবশেষে বনকর্মীদের ফাঁদে সেই ভাল্লুক।
রবিবার বিকেলে ডুয়ার্সের বানারহাট ব্লকের উত্তর শালবাড়ি এলাকায় ভাল্লুকটিকে দেখতে পান সেখানকার বাসিন্দারা। স্থানীয় একটি বাঁশের ঝোপে বসেছিল প্রাণীটি। খবর পেয়ে ছুটে যান বিন্নাগুড়ি ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াডের কর্মীরা। দুর্ঘটনা এড়াতে এলাকা ঘিরে ফেলেন বানারহাট থানার পুলিশ। ঘুম পাড়ানি গুলির সাহায্যে ভাল্লুকটিকে খাঁচাবন্দি করে গরুমারা প্রকৃত বীক্ষন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাতেই ভল্লুকটিকে নেওড়া ভ্যালির জঙ্গলে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: বিজেপির কার্যালয় থেকে ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র গ্যাস বিতরণ, দুর্গাপুরে তুমুল বিতর্ক]
ডুয়ার্সের মালবাজার, নাগরাকাটা, আলিপুরদুয়ারের পর এবার বানারহাটের উত্তর শালবাড়ি এলাকায় ভল্লুক উদ্ধারের ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই সমতলে আরও ভল্লুকের লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না বনদপ্তর। জানা গিয়েছে, এশিয়াটিক ব্ল্যাক বিয়ার প্রজাতির উদ্ধার হওয়া ভাল্লুকটি মাঝবয়সী। এটি বেশ কয়েকদিন আগেই সমতলে নেমে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। উত্তর শালবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত কয়েকদিন ধরে ভাল্লুকের উপস্থিতি টের পাচ্ছিলেন তারা। পাশে নাথুয়া, চানাডিবা গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দাও ভল্লুক দেখেছেন বলে বনদপ্তরকে জানিয়ে ছিলেন। বনকর্মীরা এসে অনেক খোঁজাখুজির পরেও ভল্লুকের হদিশ করতে পারেননি।
রবিবার বিকেলে স্থানীয় কয়েক জন কিশোর মাঠে খেলতে গিয়ে বাঁশের ঝোপে কালো লোমশ প্রানীটিকে শুয়ে থাকতে দেখে বড়দের খবর দেয়। বড়রা গিয়ে দেখতে পান ভাল্লুক। মুহূর্তের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর যায় বন দপ্তরে। বন বিভাগের ওয়াইল্ড লাইফ ওয়াডেন সীমা চৌধুরী জানান, খবর পেয়ে বিন্নাগুড়ি, মরাঘাট রেঞ্জের কর্মীরা গিয়ে ঘুম পাড়ানি গুলি করে ভাল্লুকটিকে বন্দি করে। গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক জন্মেজয় পাল জানান, ভল্লুকটি সুস্থই রয়েছে। উদ্ধারের পর প্রকৃতি বীক্ষন কেন্দ্রে এনে প্রাথমিক চিকিৎসার পর নেওড়া ভ্যালির জঙ্গলে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।