সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রাতভর বন্ধুর জন্মদিনের পার্টির পর পুরুলিয়ার (Purulia) প্রস্তাবিত জাতীয় সরোবর সাহেব বাঁধে তলিয়ে মৃত্যু হল এক সিআইএসএফ (CISF) জওয়ানের। মৃত জওয়ানের নাম সুমন মুখোপাধ্যায় (২৭)। বাড়ি পুরুলিয়ার পুর শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের হুচুক পাড়ায়।
মঙ্গলবার সাতসকালে ওই জওয়ানের নিখোঁজ হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। ভরা বর্ষায় টইটুম্বুর সাহেব বাঁধে ওই জওয়ানের খোঁজ চালায় পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। কিন্তু খোঁজ মেলেনি। পরে বেলার দিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দল উদ্ধারকাজে হাত দেয়। ছ’ঘণ্টার বেশি সময় তল্লাশির পর বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ ওই জওয়ানের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় সাহেব বাঁধ এলাকায় ভিড় উপচে পড়ে। ওই সিআইএসএফ জওয়ানের দুই বন্ধুকে আটক করেছে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ জানিয়েছে, সুমন নামে ওই সিআইএসএফ জওয়ান উত্তরাখণ্ডে কর্মরত ছিলেন। কর্মস্থল থেকে ছুটি পেয়ে গত ১৭ জুলাই তিনি পুরুলিয়া শহরে তাঁর বাড়িতে আসেন। পুলিশ ওই জওয়ানের যে দুই বন্ধুকে আটক করেছে তার মধ্যে একজনের বাড়ি সাহেব বাঁধের পাশেই শহরের নর্থলেক রোড এলাকায়। আরেকজন থাকেন নিমটাড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্ধুর জন্মদিন পালন করতে সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হন সুমন। তবে বন্ধুর জন্মদিনের পার্টি কোথায় ছিল তা এখনও কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ। জানা গিয়েছে, রাতভর পার্টি সেরে ভোররাতে তিন বন্ধু এই সাহেব বাঁধের পাড়ে ছিলেন বলে খবর। সেই সময় কোনও কারণে দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে সবকিছু খতিয়ে দেখছে পুরুলিয়া সদর থানার পুলিশ। এদিন উদ্ধারকাজে তদারকি করতে সাহেব বাঁধে যান পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল থেকে ঘটনাস্থলে ছিলেন পুরুলিয়া পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর
বিভাসরঞ্জন দাস।
[আরও পড়ুন: মাসের শেষ দিনে Ration বিলি নয়, নতুন নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার]
পুরুলিয়ার সাহেব বাঁধ একটি টুরিস্ট স্পট। রাজ্যের বনবিভাগের সৌন্দর্যায়ন ও সংরক্ষণ কাজের মধ্যেই এই জলাশয়ে পুরুলিয়া পুরসভার উদ্যোগে শিকারা পয়েন্ট চালু হয়েছে। ইতিমধ্যেই সাহেব বাঁধের চারপাশ লোহার বেষ্টনী দ্বারা ঘেরা। তবে এখনও নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়নি। তাই নজরদারির জন্য কোনও রক্ষী মোতায়েন নেই। বর্তমানে পুরুলিয়া পুরসভার তত্ত্বাবধানেই জলাশয় রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাহেব বাঁধকে ঘিরে নজরদারির ব্যবস্থা থাকলে এই দুর্ঘটনা হতো না।