সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাকে বলা হচ্ছে ‘বিবর্তনের বিস্ময়’। মাটির ৬০ মিটার গভীরে ঘোর অন্ধকারের মধ্যে বাস করে সে। এই খুদে প্রাণীটিকে দেখে বিস্ময়ের ঘোর আর কাটছে না বিজ্ঞানীদের। কেন? আসলে বড়জোর ৩ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এই প্রাণীটির পায়ের সংখ্যা ১ হাজার ৩০৬! পৃথিবীতে কোনও প্রাণীরই এতগুলি পা নেই। স্বভাবতই এই প্রাণীকে ঘিরে বাড়ছে উত্তেজনা।
সন্ধিপদী অর্থাৎ আর্থ্রোপোডা (arthropods) এই প্রাণীটি মিলিপেড গোত্রের। এই শব্দটির অর্থ হাজার পা হলেও এতদিন পর্যন্ত এই গোত্রের প্রাণীদের মধ্যে সর্বোচ্চ পায়ের সংখ্যা ইলাকমে প্লেনিপসের। তাদের পায়ের সংখ্যা ৭৫০। কিন্তু ইউমিলিপস পার্সেফোন নামের এই নয়া আবিষ্কৃত প্রাণীটির পায়ের সংখ্যা ১ হাজারকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘চাইলে আরও রাফালে যুদ্ধবিমান দেব’, বন্ধু ভারতকে বার্তা ফ্রান্সের]
কিন্তু কেন এদের পায়ের সংখ্যা এত বেশি? গবেষকদের মতে, মাটির নিচে সূক্ষ্ম ফাটলের ভিতর দিয়ে যেতে গেলে এতগুলি পায়ের সাহায্যেই ধাক্কা মেরে পথ করে এগিয়ে চলা যায়। তাই বিবর্তনের ফলেই ক্রমশ বেড়েছে পায়ের সংখ্যা।
‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামের এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। সেটির অন্যতম লেখক পল মারেক জানাচ্ছেন, স্ত্রী প্রাণীগুলির পায়ের সংখ্যা পুরুষদের থেকেও বেশি। তাঁদের মতে, এই প্রাণীটি সত্য়িই ‘বিবর্তনের বিস্ময়’। অন্ধকারের বাসিন্দা এই প্রাণীগুলির দৃষ্টিশক্তি নেই। জন্মগত ভাবেই এরা অন্ধ। তাই স্পর্শ ও গন্ধকে সম্বল করেই শঙ্কু আকৃতির মাথা ও চঞ্চু-সদৃশ মুখের এই সন্ধিপদীরা পথ চলে। অস্ট্রেলিয়ার যেখানে এদের সন্ধান মিলেছে সেটি খাদান এলাকা। মাটির গভীরে লোহা ও আগ্নেয় পাথর রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এই ধরনের পরিবেশই হয়তো এদের বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ।
আর্থ্রোপোডারাই হল প্রথম প্রাণী যারা জমির দখল নিয়েছিল। নতুন আবিষ্কৃত এই প্রাণীটি মাটির অনেক গভীরে বাস করে। যা এক বিস্ময়। এদের ভাল করে পর্যবেক্ষণ করলে আরও নানা অজানা তথ্য জানা যাবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।