shono
Advertisement

জমা জলে বিকল অ্যাম্বুল্যান্স, ঠেলে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন চালক

অ্যাম্বুল্যান্স চালকের প্রশংসা করেছেন সকলে।
Posted: 10:52 AM Jul 31, 2021Updated: 10:52 AM Jul 31, 2021

অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: জমা জলের মধ্যে হঠাৎই বিকল হয়ে গিয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্স। ভিতরে ছিলেন হৃদরোগে আক্রান্ত এক রোগী। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পারলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সামনের রাস্তায় শুধু জল। প্রায় দেড় ফুট জলে ডুবে অ্যাম্বুল্যান্সটি। এই পরিস্থিতিতে কোনও কিছু না ভেবে সহকারীকে স্টিয়ারিং-এ বসিয়ে প্রায় আধ কিলোমিটার জলের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি ঠেলতে ঠেলতে শেষ পর্যন্ত রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন চালক। আশপাশের লোকজন ঘটনাটি দেখলেও একজন সাইকেল আরোহী ছাড়া কেউই সাহাযে্যর হাত বাড়াননি। প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হাওড়া শহরে শুক্রবার মানবতার নজির গড়লেন কোনার বাসিন্দা অ্যাম্বুল্যান্স চালক রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত অশোক ঘড়ুই (৫৫)-কে কোনার বাড়ি থেকে নিয়ে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করার জন্য রওনা হয় অ্যাম্বুল্যান্সটি। তাতে ছিলেন রোগীর স্ত্রী ও তাঁর এক আত্মীয়া। অ্যাম্বুল্যান্স চালক রঞ্জিত জানান, কোনা থেকে দাশনগর হয়ে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে আসাটা সহজ হলেও হাওড়া-আমতা রোড-সহ দাশনগরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন থাকায় তিনি কোনও ঝুঁকি নেননি। ঘুরপথে বাঁকড়া দিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে কোনা এক্সপ্রেস দিয়ে বেলেপোল মোড়ে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে এসে পৌঁছান। তিনি বলেন, “বেলেপোলের মোড়ে এসে দেখি প্রায় দেড়ফুট জল। পুলিশ সমস্ত গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে। আমি রোগীকে দ্রুত পৌঁছবার জন্য ঝুঁকি নিয়ে জলের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে দিই। কিন্তু কিছুটা যাওয়ার পরেই গাড়ি বিগড়ে দাঁড়িয়ে যায়। হাসপাতাল তখনও প্রায় আধ কিলোমিটার।”

[আরও পড়ুন: একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে Anubrata-Parambrata, তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন অভিনেতা? তুঙ্গে জল্পনা]

ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালক জানান, তিনি একটুও না ঘাবড়ে সহকারীকে স্টিয়ারিং-এ বসিয়ে জলে নেমে রোগীসুদ্ধ অ্যাম্বুল্যান্স ঠেলতে শুরু করেন। একটাই লক্ষ্য, হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভরতি করা। অশোকবাবুর আত্মীয়া রুমা ধাড়া বলেন, “জমা জলের মধ্যেই একা গাড়িটি ঠেলতে ঠেলতে হাসপাতালে পৌঁছে দেন উনি। শেষে হাসপাতালে পৌঁছে ক্লান্ত হয়ে সিঁড়িতে বসে পড়েন। এই সাহায্য আমরা কোনও দিন ভুলব না।” রঞ্জিতবাবু বলেন, “রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছনোটাই আমার কাজ। তাই করেছি।”

শুক্রবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন হাওড়ার (Howrah) কোনার বাসিন্দা অশোকবাবু। দ্বিতীয়বার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তাঁরা। চিকিৎসক ওই প্রৌঢ়কে হাসপাতালে ভরতি করার পরামর্শ দেন। বাড়ির লোক করে, ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের ধারে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাবেন অশোকবাবুকে। কিন্তু শহরজুড়ে জমা জলে কী করবেন প্রথমে তা বুঝে উঠতে পারেননি। কোনও অ্যাম্বুল্যান্সই যেতে চায়নি। অশোকবাবুর পরিবারের সদস্যরা জানান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক খোঁজাখুঁজির পর কোনার একটি ক্লাবের ওই অ্যাম্বুল্যান্স চালককে খুঁজে পান। এক কথায় রোগীকে যেভাবেই হোক জমা জলের মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজি হন তিনি। অবশেষে কথা রাখেন রঞ্জিত।

[আরও পড়ুন: Coronavirus : ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে বাংলা, গত ২৪ ঘণ্টায় একধাক্কায় অনেকটা কমল মৃত্যু]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement