বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: প্রেমিক গায়ের রং ‘কালো’ বলে গঞ্জনা দেওয়ায় আত্মহত্যা (Suicide) করল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। নাবালিককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে রানা হালদার নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। মৃত ছাত্রীর দিদির অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই ছাত্রীর নাম মিষ্টু মালাকার (১৬)। বাড়ি চাকদহের (Chakdaha) তিন নম্বর দুর্গানগরে। চাকদহের পূর্বাচল বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে। মিষ্টুরা দুই বোন। বড় বোন ডলির বিয়ে হয়েছে বনগাঁয়। তিন নম্বর দুর্গানগরে বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকত মিষ্টু। রবিবার দুপুরে বাড়িতে ছিলেন না মিষ্টুর বাবা-মা। সেই সময় একটি সুইসাইড নোট লিখে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের মধ্যেই আত্মহত্যা করে মিষ্টু। মৃতার পরিবারের দাবি, সুইসাইড নোটে তাঁর মৃত্যুর জন্য প্রেমিক রানা হালদারকে দায়ী করে গিয়েছে ওই ছাত্রী।
[আরও পড়ুন: গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনার বলি ৫, দৈনিক সংক্রমণের হার বাড়াচ্ছে উদ্বেগ]
মৃতার দিদি ডলি হালদারের অভিযোগ, “এক সময় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বোনকে উত্যক্ত করত যুবক। এরপর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু একাধিক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখত রানা। সেই খবর জেনে যাওয়ার পর বোন প্রতিবাদ করে। তা ধামাচাপা দিতে বোনকে কালো বলে গঞ্জনা দিতে শুরু করে। এতেই আমার বোন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আমার বোনকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে রানা।”
ডলি আরও বলেন, “এবছরের জানুয়ারি মাস থেকে বোনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে রানা হালদারের।রানার বাড়ি চাকদহ পিকনিক গার্ডেনের কাছে মোসলেন মাঠ সংলগ্ন এলাকায়। বোনের গায়ের রং একটু চাপা ছিল। সেই কথা বলে ওকে অপবাদ দিত রানা। এরপর সে সম্পর্ক সরে যেতে বোনের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে। অন্যদিকে বোন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। রবিবার যখন বাড়িতে কেউ ছিল না। তখন রানা হালদারের নাম করে সুইসাইড নোট লিখে গলায় ফাঁস দেয় বোন। পুলিশের কাছে যুবকের শাস্তির দাবি জানিয়েছি আমরা।”
[আরও পড়ুন: কেজরিওয়ালের পথেই খড়গপুর আইআইটির আরও এক ছাত্র, বাংলায় AAP-এর প্রচার শুরু সুধীর সিংয়ের]
মৃতার দিদির অভিযোগের ভিত্তিতে রানাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যদিও পুলিশের কাছে রানা দাবি করেছে, ওই ছাত্রীর সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল, প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। মঙ্গলবার অভিযুক্ত যুবককে কল্যাণী মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।