সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সহজে ঋণ দেওয়ার টোপ দিয়ে গ্রাহকদের ফাঁসানো হত জালে। ১০০টির বেশি লোন অ্যাপ (Loan App) ব্যবহার করে চলছিল চক্র। একবার ঋণ নিলেই ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে শুরু হত ব্ল্যাকমেল। ছবি বিকৃত করে পর্ন সাইটে দেওয়ার ভয় দেখানো হত। ঋণ বাবদ দেওয়া টাকার থেকে অনেক বেশি অঙ্ক হাতিয়ে নেওয়া হত গ্রাহকদের থেকে। এবাবে ৫০০ কোটি টাকা তোলাবাজির অভিযোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করল দিল্লি পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই প্রতারণার চক্রের পিছনে রয়েছে কয়েকজন চিনা নাগরিক।
প্রতারণার শ-খানিক অভিযোগ পাওয়ার পরেই ঘটনার তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)। বিগত দুই মাস ধরে অভিযান চালানোর পর রহস্যের সমাধান হল। মূলত লোন অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের ফাঁসানো হত। নিরুপায় হয়ে ঋণ নেওয়া গ্রাহকরাই এদের ফাঁদে পা দিত। প্রথমত বাজারের তুলনায় অনেক বেশি চড়া সুদে ঋণ দেওয়া হত। অভিযোগ, সুদ সমেত ঋণ মিটিয়ে দিলেও স্বস্তি পেতেন না গ্রাহকরা। এরপর শুরু হত ব্ল্যাকমেল।
[আরও পড়ুন: স্বস্তি ফিরল দেশের কোভিড গ্রাফে, অ্যাকটিভ কেস নামল লাখের নিচে, নিম্নমুখী দৈনিক আক্রান্ত]
ঋণ পাওয়ার প্রক্রিয়ার সময় ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিত প্রতারকরা। এবার সেই তথ্যই কাজে লাগানো হত। বিভিন্ন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ছবি বিকৃত করে তা সোশ্যাল মিডিয়া ও পর্ন সাইটে ছেড়ে দেওয়া হবে, এই ভয় দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা আদায় করা হত গ্রাহকদের থেকে। এভাবেই মোট ৫০০ কোটি টাকা জালিয়াতি করা হয়। সেই টাকা হাওয়ালা ও ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে চিনে পাঠানো হত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই কাজে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হত। দিনে ১ কোটি টাকার বেশি আয় করত চক্রটি। দিল্লি, কর্নাটক মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে ছিল এই প্রতারণার জাল। ইতিমধ্যে প্রতারক ক্ষুদ্র ঋণের অ্যাপগুলির নাম প্রকাশ্যে এনেছে পুলিশ। সেগুলি হল ক্যাশ পোর্ট, রুপি ওয়ে, লোন কিউব, ওয়াও রুপি, স্মার্ট ওয়ালেট, জায়ান্ট ওয়ালেট, হাই রুপি, সুইফট রুপি, ওয়ালেটউইন, ফিশক্লাব, ইয়েহক্যাশ, ইম লোন, গ্রোট্রি, ম্যাজিক ব্যালেন্স, ইয়োক্যাশ, ফরচুন ট্রি, সুপারকয়েন, রেড ম্যাজিক।
[আরও পড়ুন: মদ কেলেঙ্কারিতে মণীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিস, যেতে পারবেন না বিদেশে]
এদিকে পুলিশে অভিযানে বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৫১টি মোবাইল, ২৫ হার্ড ডিস্ক, ৯টি ল্যাপটপ, ১৯টি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড, ৩টি গাড়ি এবং ৪ লক্ষ টাকা নগদ। গোটা দেশ থেকে যে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মাধ্যমে চিনা নাগরিকদের হদিশ পেতে চাইছে দিল্লি পুলিশ।