দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: আট বছর আগে জার্মানিতে চাকরি করতে গিয়েছিলেন হুগলির ত্রিয়া। কর্মসূত্রে সেখানেই ত্রিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় জার্মানির ড্যানিয়েলের। আর সেই পরিচয়ের পর দীর্ঘ আট বছর কেটে যাওয়ার পর সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দু’টি হৃদয়ের মিলন। মিটল পরিণয় পর্ব। ত্রিয়া জার্মানির সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। কিন্তু জার্মান পাত্র ড্যানিয়েলের একান্ত ইচ্ছা ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত না হয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন না। শেষ পর্যন্ত প্রেমিকের সেই ইচ্ছাপূরণ করতে সুদূর জার্মানি থেকে যুগলে ছুটে এলেন হুগলির চুঁচুড়ায়।
মঙ্গলবার দুই পরিবারের উপস্থিতিতে বাগদান পর্ব উপলক্ষে লোকসংস্কৃতির আসর বসে। চুঁচুড়া স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরে মহেশপুরে গ্রামবাংলার প্রকৃতির মাঝে এক অনুষ্ঠানবাড়িতে লোকসংস্কৃতির আসর বসে। সেখানেই সারা হয় বাগদান পর্ব। সেখানে শিল্পীরা সাঁওতালি নৃত্য, আদিবাসী নৃত্য ছাড়াও স্থানীয় গান্ধীগ্রামের শিবদুর্গা ব্রতচারী মণ্ডলীর সদস্যরা ব্রতচারী নৃত্য প্রদর্শন করেন। বুধবার সন্ধেয় বিয়ে। সকাল থেকেই পাত্র ড্যানিয়েল বাঙালির সেই ঐতিহ্যবাহী ধুতি ও পাঞ্জাবি পরে হাসিমুখে সমস্ত অনুষ্ঠান পালন করেন।
[আরও পড়ুন: তদন্তে ‘অসহযোগিতা’, গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার অনুব্রত মণ্ডল]
অনুষ্ঠানের আয়োজন দেখে রীতিমতো আপ্লুত ড্যানিয়েল বলেন, “এখানকার আতিথেয়তার তুলনা হয় না।” এই প্রথম তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন ভারতে এসেছেন। এখানকার সংস্কৃতি ও নৃত্যকলার সত্যিই কোনও তুলনা হয় না। অন্যদিকে ত্রিয়া চট্টোপাধ্যায় জানান, ২০১৪ সালে তিনি জার্মানি গিয়েছেন। সেখানে ইন্টার্নশিপ করতে গিয়ে ড্যানিয়েলের সঙ্গে পরিচয়। জার্মানির সংস্কৃতির সঙ্গে তিনি অনেকটাই পরিচিত।
কিন্তু ত্রিয়ার হবু বর ড্যানিয়েল ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাই তাঁর ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে দুই পরিবার বিয়ে উপলক্ষে হুগলিতে একত্রিত হয়েছেন। ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। এক কথায় এই বিয়েকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে এক সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন গড়তে চায় দুই পরিবার।