ধীমান রায়, কাটোয়া: মাটির বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল একই পরিবারের তিনজনের। বৃহ্স্পতিবার গভীর রাতে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের গোবর্ধনপুরে। বিষয়টি টের পেয়ে স্থানীয়রাই উদ্ধার করে দেহগুলি। সকালে পুলিশ দেহগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানোর কথা বলতেই বাধে গোল। ময়নাতদন্ত করানো হবে না, এই দাবি জানিয়ে দেহগুলি আটকে রাখে তাঁরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
জানা গিয়েছে, অন্যান্যদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতেও গোবর্ধনপুর গ্রামের ওই পরিবার খাওয়াদাওয়া সেরে ঘুমতে যায়। রাত প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাড়ির দেওয়াল। পরিবারের পাঁচজন ছিলেন দোতলায়। তাঁদের মধ্যে তিনজন অর্থাৎ গৃহকর্তী টগরা বিবি, তাঁর মেয়ে ও নাতনি দেওয়ালের নিচে চাপা পড়ে যান। বিষয়টি টের পেয়ে বাকি দু’জন আতঙ্কে চিৎকার শুরু করেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবেশীরা জেগে যান। এরপর তাঁরাই সারারাত ধরেই ধংসস্তুপ সরিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করেন। স্থানীয়দের দাবি, তিনজনই উদ্ধারের আগে মারা গিয়েছিল।
[আরও পড়ুন:চলতি সপ্তাহে কেমন থাকবে রাজ্যের আবহাওয়া? জেনে নিন কী বলছে হাওয়া অফিস]
শুক্রবার ভোরের দিকে এই ঘটনার খবর পুলিশের কাছে পৌঁছয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশ প্রথমে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে ঘটনাস্থলে পাঠায়। তাঁদের দেখা মাত্র গ্রামবাসীরা সাফ জানিয়ে দেন, ময়নাতদন্তে সায় নেই তাঁদের। সেইসঙ্গে দেহ কবর দেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করে দেয় তাঁরা। সিভিক ভলান্টিয়াররা বোঝানোর চেষ্টা করতেই তাঁদের মারধর করে গ্রাম থেকে বের করে দেয় উত্তেজিত জনতা। পরে পুলিশ গ্রামে ঢুকতেই তাঁদেরও গ্রাম থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। মৃতদের পরিবারের কথায়, সরকারি আবাস যোজনার আবেদন করা সত্ত্বেও তাঁদের সরকারি অনুদান দেওয়া হয়নি। তাই ভাঙা বাড়িতে বাস করতে হচ্ছিল। সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা। ফলত ক্ষোভে ফুঁসছে তাঁরা।
ছবি: জয়ন্ত সাহা
[আরও পড়ুন:বাড়িতে ভূত পোষেন! প্রতিবেশীদের অভিযোগে একঘরে রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার]
The post বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত শিশু-সহ ৩, দেহ উদ্ধারে গিয়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.