সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যে কাজ করা উচিত ছিল শিক্ষকদের, তা করল ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) একটি স্কুলের খুদে পড়ুয়া। একটি ভিডিও করে সে নিজের স্কুলের বেহাল দশা সর্বসমক্ষে তুলে ধরল। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই ব্যবস্থা নিল প্রশাসন। এমনকী আসরে নামলেন রাজ্যের স্কুল শিক্ষা মন্ত্রী। যদিও এই কাজ করায় উলটে শিক্ষকদের রোষাণলে পড়েছে খুদে। কেন?
আসলে সে দেখিয়ে দেয়, গোড্ডার মাহগামা ব্লকের ভিখিয়াচক প্রাথমিক স্কুলের চরম অবস্থা! যা আদতে ওই স্কুলের শিক্ষকদের অযোগ্যতারই প্রমাণ দেয়। টিউবওয়েলের লাইন করা হয়েছে, কিন্তু আজ অবধি কল লাগানো হয়নি। ফলে জল নেই স্কুলে। গোটা স্কুল চত্বর ঘন জঙ্গলে ভরতি। শৌচাগারের অবস্থাও ভয়াবহ। প্রয়োজন পড়লে বাইরে শৌচকর্মে যেতে হয় পড়ুয়াদের। শ্রেণিকক্ষের অবস্থাও তথৈবচ। সেখানে ঢোকে না আলো-বাতাস। সর্বক্ষণ খসে পড়ছে পলেস্তরা। মাথার উপরে ঝুলছে সাক্ষাৎ বিপদ।
[আরও পড়ুন: বিধানসভাতেও আর মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ঠাঁই হবে না পার্থর, বদলাচ্ছে আসন]
এখানেই শেষ নয়, খুদে পড়ুয়ার ওই ভিডিওতে স্কুলের অন্য খুদেরা অভিযোগ করেছে, শিক্ষকরা স্কুলে ঠিক মতো পড়ান না। এমনকী অনেকে শিক্ষক নিয়মিত স্কুলেই আসেন না। এত বড় কাণ্ড করে যে করেছে, যার প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেন, সে হল খুদে ‘সাংবাদিক’ সরফরাজ। যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে দেখা গিয়েছে, লুঙ্গি আর হলুদ টিশার্ট পরা সরফরাজের হাতে নকল বুম। যা আসলে লাঠির মাথায় লাগানো একটি পানীয়ের বোতল।
ওই বুম হাতেই স্কুলের ভয়ংকর অবস্থা ঘুরে দেখায় সরফরাজ। ঠিক একজন সাংবাদিকের কায়দায় সঙ্গী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে। জানতে চায় স্কুল ও শিক্ষকদের সম্পর্কে। সবকিছু খুলে বলে তারা। তখনই জানা যায়, স্কুলের ঘরে গবাদি পশুর খাবার রাখা থাকে। পড়াশুনো কখনওসখনও হয়। নিজের স্কুলের এই অবস্থা দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনের (Hemant Soren) কাছে দোষী শিক্ষকদের বরখাস্ত করার দাবি জানায় সে। এতেই বিপাকে পড়েন শিক্ষকরা। অন্যদিকে আমজনতার নয়ণের মণি হয়ে ওঠে সরফরাজ।
[আরও পড়ুন: ৪ সন্তানকে নিয়ে কুয়োতে ঝাঁপ তরুণীর, নিজে বাঁচলেও হারালেন চার শিশুকেই]
জানা গিয়েছে, সরফরাজের ভিডিও ভাইরাল হতেই তাজিমুদ্দিন নামে এক শিক্ষক এসে শিশু পড়ুয়ার বাবা-মাকে হুমকি দেয়। যার পর তাজিমুদ্দিনকে বরখাস্ত করার দাবি জানায় সরফরাজ। গোটা বিষয়টি জনসমক্ষে আসায় নড়চড়ে বসে প্রশাসন। জেলা শিক্ষা আধিকারিক ওই স্কুলের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছেন। এমনকী খোদ ঝাড়খণ্ডের স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী সরফরাজকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, শিক্ষককে বরখাস্ত করা উচিত কি না। সেটাই ভাল হবে, জানিয়ে দিয়েছে বড় হয়ে সাংবাদিক হতে চাওয়া ক্ষুদে সরফরাজ।