অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায় (Tikiapara) বছর চারেক খুদেকে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার তার সৎ বাবা। সিসিটিভি ফুটেজের সূত্র ধরে অভিযুক্তকে প্রথমে আটক করা হয়। রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের পর বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কী কারণে খুদেকে খুন করল সে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
ধাড়সার মল্লিকপাড়ার ২ নম্বর রামকৃষ্ণ কলোনিতে সৎ বাবা উমেশ দ্বিবেদীর সঙ্গে থাকত মহম্মদ সাহিল। চার বছর আগে বাবা তাদের ছেড়ে বিহারে চলে যায়। তাই বছর দেড়েক আগে সাহিলের মা আসমা বেগম পেশায় দিনমজুর উমেশকে বিয়ে করেন। গত ২৮ জানুয়ারি আসমা দিল্লিতে পরিচারিকার কাজে যোগ দিতে যান। যাওয়ার আগে জানিয়ে যান, কাজে বেরনোর আগে উমেশ যেন সাহিলকে তার দিদিমা বাঁকড়ার নিউ মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা আমিনা বেগমের কাছে রেখে যান। সেইমতো উমেশ সোমবার বিকেলে কাজে যাওয়ার আগে সাহিলকে দিদার কাছে রেখেও যান।
[আরও পড়ুন: চিড়িয়াখানার রক্ষীকে মেরে সঙ্গী সিংহকে নিয়ে চম্পট সিংহীর, আতঙ্ক শহরজুড়ে]
দিদা আমিনা বেগম জানান, সাহিল বাড়ির সামনে খেলছিল। তিনি ঘরের কাজে ব্যস্ত থাকায় অতটা খেয়াল করেননি। হঠাৎই তিনি সাহিলকে বাড়ির সামনে দিয়ে ছুটে চলে যেতে দেখেন। তারপর থেকে তার আর কোনও খোঁজ মেলেনি। চারদিকে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির হদিশ মেলেনি। রাতেই ডোমজুড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এরপর মঙ্গলবার সকালে টিকিয়াপাড়া স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে কাঠপোল এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের বেসমেন্টে জমে থাকা জলে একটি শিশুর দেহ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা হাওড়া থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে জলের মধ্যে রাখা একটি লোহার বিমের পাশ থেকে দেহটি উদ্ধার করে। জানা যায়, দেহটি নিখোঁজ সাহিলেরই।
এরপরই দানা বাঁধে রহস্য। মণ্ডলপাড়ায় দিদার বাড়ি থেকে শিশুটি প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে টিকিয়াপাড়ায় কীভাবে পৌঁছল, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সৎ বাবা উমেশই তাকে খুন করেছে বলেই অভিযোগ ওঠে। এরপর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। শেষবার সৎ বাবার সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তাকে। সেই সূত্র ধরেই শিশুটির সৎ বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কী কারণে উমেশ তার সন্তানকে খুন করেছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।