সুকুমার সরকার, ঢাকা: একের পর এক তরুণীর সঙ্গে প্রেম। ঘনিষ্ঠতা হতে না হতেই বিয়ে। এরপর গোপন মুহূর্তের ছবি ক্যামেরাবন্দিও করত সে। দিনকয়েক সংসার চলার পরই সম্পর্কে ছেদ। স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকা হাতানোর ছক। প্রায় বছরদশেক ধরে একাজ করার পর গ্রেপ্তার যুবক। ঢাকার অদূরে গাজিপুরের গাছা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে।
ধৃত বছর বত্রিশের যুবক তাজবিরুল ইসলাম সবুজ ওরফে শেখ শিমুল বাগেরহাটের বাসিন্দা। ২০০৫ সালে প্রথম বিয়ে করে সে। বছরখানেক সংসারও করে দু’জনে। তবে তারপর বিচ্ছেদ হয় তাদের। ২০১২ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে সে। তার সঙ্গে বছরখানেক সম্পর্ক ছিল দু’জনের। এরপর বাগেরহাট থেকে গাজীপুরে চলে আসে সে। একটি পোশাক কারখানায় চাকরি পায়। ২০১৪ সালে ওই কারখানারই এক কর্মীকে বিয়ে করে। ২০১৮ সালে নিজেকে অবিবাহিত পরিচয়ে একজন পোশাক কারখানার কর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। পরে তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে। ছবি ক্যামেরাবন্দি করে।
[আরও পড়ুন: খাস কলকাতায় বার সিঙ্গারের রহস্যমৃত্যু, খুনের অভিযোগে সরব বাবা-মা]
তদন্তকারীরা আরও জানান, ১০ বছর ধরে গাজিপুরের একটি বস্ত্র বিপণীতে লাইনম্যান হিসেবে চাকরি করত সে। সেই সুবাদে গাজিপুরেই বসবাস করত তাজবিরুল। নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিত সে। ভুয়ো পরিচয়ে একাধিক তরুণীকে ভুয়ো কাজির সঙ্গে যোগসাজশ করে বিয়ে করত। স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করত। গোপনেই চলত তাদের দাম্পত্য জীবন। বছরখানেক যেতে না যেতেই শিমুলের আসল রূপ প্রকাশ পেত। আর তা দেখেই আঁতকে উঠতেন অসহায় তরুণীরা।
এমনই এর অসহায় তরুণী সুবিচারের আশায় আইনের সাহায্য নেন। তারই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা শিমুলের খোঁজ শুরু করে। গাজিপুর থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় শিমুলের কাছ থেকে সাংবাদিকের ভুয়ো পরিচয়পত্র, দু’টি ভুয়ো সার্টিফিকেট, ১১টি ভুয়ো পরিচয়পত্র, তিনটি ভিজিটিং কার্ড, একটি গোপন ক্যামেরা, সাতটি এটিএম কার্ড, ছ’টি চেকবই, একটি পে অর্ডার, একটি বিয়ের হলফনামা, একটি জীবনবৃত্তান্ত, একটি সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত বেল্ট, চারটি পেনড্রাইভ, দু’টি মেমোরি কার্ড, ছয়টি মোবাইল ফোন ও ৪১টি সিমকার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।