সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: সামনেই পরীক্ষা, তাই অনলাইন গেম খেলতে বারণ করেছিলেন মা। যার পরিণতি হল মর্মান্তিক! অভিমানে আত্মঘাতী অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটেছে দুর্গাপুরের (Durgapur) বেনাচিতিতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম রাশ রাউত (১৫)। দুর্গাপুর থানা এলাকার বেনাচিতি সংলগ্ন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নতুনপল্লী এলাকার বাসিন্দা সে। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ত ওই কিশোর। বাবা সঞ্জয় রাউতের আয় সামান্য। অভাবের সংসারেও কষ্ট করে ছেলেকে বেসরকারি স্কুলে ভরতি করেছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন: Babul Supriyo Joins TMC: ‘বোন’ প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে ভবানীপুরে প্রচার করবেন? মুখ খুললেন বাবুল]
সঞ্জয়বাবু জানান, অন্যান্যদিনের মতোই এদিন দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর মোবাইলে গেম খেলছিল রাশ। মা মোবাইল রেখে পড়ার কথা বলতেই দরজা বন্ধ করে দেয় রাশ। দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও তার খোঁজ না মেলায় ডাকাডাকি করা হয়। তাতেও সাড়া মেলেনি। খাওয়া দাওয়া সেরে ফের কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন সঞ্জয়বাবু। এরপর বাধ্য হয়েই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। দরজা ভাঙতেই ঘর থেকে উদ্ধার হয় রাশের ঝুলন্ত দেহ।
সঞ্জয়বাবু জানান, “ছেলে পড়াশোনায় ভাল ছিল। যেহেতু এখন অনলাইনেই ক্লাস ও পরীক্ষা চলছে তাই কষ্ট হলেও ছেলেকে মোবাইল কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই মোবাইলই যে আমার ছেলের প্রাণ কেড়ে নেবে বুঝিনি।” কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবার পরিজন। মৃত রাশের দিদি নেহা রাউত জানান, “ফ্রি ফায়ার গেম ডাউনলোড করেছিল ভাই। তাই মা ওকে বকাঝকা করত। মায়ের কাছে বকা খেলে ভাই অভিমানে দরজা বন্ধ করে দিত। গেটে তালা বন্ধ করে দিতো। বেশিরভাগ দিনই ঘুমিয়ে পড়ত। এদিন আর দরজা খোলেনি।” রাতেই পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। রবিবার ময়নাতদন্তের পর দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।